২২এপ্রিল,২০০৩। অষ্টগ্রামের ইতিহাসে উল্লেখযোগ্য ও মর্মান্তিক একটি লঞ্চ দুর্ঘটনা। ঐদিন আজকের মহামান্য তৎকালীন বিরোধী দলের উপনেতা ও সাংসদ জনাব মো: আব্দুল হামিদ এর সফর সঙ্গী হিসেবে কিশোরগন্জ জেলার করিমগঞ্জ উপজেলার চামটার বন্দর থেকে অষ্টগ্রাম এর উদ্দেশ্যে রওয়ানা করি। প্রায় আধঘন্টার মধ্যে শুরু হয় ঝড়ের তান্ডব।বাঁচার সম্ভাবনা প্রায় ছেড়েই দিয়েছিলাম। দেখেছি বিপদে হামিদ ভাই কত শক্ত মনোবলের অধিকারী। স্পিড বোটের নিয়ন্ত্রন নিজ হাতে নিয়ে ঝড়ের পক্ষে চলছিলেন । একসময় নদীর পাড় থামলাম এবং নেমে একটা দোকান ঘরে ঢুকে জানলাম এটা নিকলী উপজেলার ছাতিরচর গ্রাম। ঝরের মধ্যে দৌড়ে হাই স্কুলে আশ্রয় নিলাম।ঝড় কমল। চারদিক থেকে হামিদ ভাইকে দেখতে হাজার মানুষের ভীড়।দুপুরবেলা খাবারে জন্য ব্যাপক আয়োজন চলছে। মানুষের ভীড় বাড়ছে বলে ইউপি চেয়ারম্যান সাহেব মাইকের ব্যাবস্থা করলেন।হঠাৎ গানম্যান মহিউদ্দিন এর সেটে খবর এল বরযাত্রীসহ পানিশ্বর এলাকায় লঞ্চ ডুবির সংবাদ। মূহুর্তে দৃশ্যপট পাল্টে গেল।মাইকে হামিদ ভাই ঘোষনা দিলেন “আমি দু:খিত আপনাদের আর সময় দিতে পারলাম না কারণ বরযাত্রী সহ লঞ্চ ডুবি হয়েছে” বলেই উনি আমাদের নিয়ে পানিশ্বর রওনা করলেন। কত মন্ত্রীদের সাহায্যের জন্য আকুতি, মিনতি,অনুরোধ করলেন লঞ্চ উদ্ধার,লাশ উদ্ধার, মানুষ উদ্ধার।তিন দিন তিন রাত ঘুম নেই, খাওয়া নেই।নেতা কাকে বলে শিখলাম, জানলাম। হামিদ ভাই মা মাটি ও মানুষের নেতা, আপনাকে সেলুট।
এই দিনে সকল বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করি।শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি জানাই গভীর সমবেদনা। দোয়া করি মহান আল্লাহ্ যেন এমন বিপদ/ কষ্ট আর না দেন।
লেখক: মো. শহীদুল ইসলাম জেমস, চেয়ারম্যান, অষ্টগ্রাম উপজেলা পরিষদ।
লেখকের ফেসবুক থেকে সংগৃহীত