নিজস্ব সংবাদদাতা : কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর উপজেলায় বিছানায় পড়ে ছিল এক সৌদিপ্রবাসীর স্ত্রী ও দুই মেয়ের মরদেহ ।
আজ মঙ্গলবার সকালে উপজেলার শাহেদল ইউনিয়নের বাসুর চর গ্রামে নিজ বাড়িতে তাদের মরদেহ পাওয়া যায়। কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
নিহতরা হলেন সৌদি আরবে প্রবাসী মঞ্জিল মিয়ার স্ত্রী তাসলিমা (৪২), মেয়ে মোহনা (১১) ও বন্যা (৭)। মোহনা স্থানীয় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণিতে এবং বন্যা প্রথম শ্রেণিতে পড়ে।
পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনাটি তাদের কাছে স্বাভাবিক মনে হয়নি। তবে এটি হত্যাকাণ্ড নাকি আত্মহত্যা, তা এখনই বলা যাচ্ছে না। পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, মঞ্জিল মিয়া পাঁচ বছর আগে সৌদি আরবে যান। বাড়িতে তাঁর স্ত্রী তাছলিমা দুই মেয়ে মোহনা ও বন্যাকে নিয়ে থাকতেন। মঙ্গলবার সকালে মোহনাকে স্কুলে নিয়ে যেতে তাঁর এক বান্ধবী তাদের ঘরে যায়। ডাকাডাকি করে সাড়া না পেয়ে দরজায় ধাক্কা দিতেই দরজাটি খুলে যায়। পরে ভেতরে গিয়ে মা ও দুই মেয়েকে বিছানায় পড়ে থাকতে দেখে। তার চিৎকার শুনে প্রতিবেশীরা সেখানে ছুটে যায়। স্থানীয়দের কাছ থেকে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ঘরের দুটি বিছানায় মা ও দুই মেয়ের লাশ পড়ে থাকতে দেখে । জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখ বলেন, ‘সিআইডির ফরেনসিক টিম ঘটনাস্থলে এসেছে। নমুনা সংগ্রহ করছেন তাঁরা। আমরা পিবিআইকেও এখানে সম্পৃক্ত করেছি। ঘটনাস্থলে যে সমস্ত আলামত রয়েছে তা সংগ্রহে কোনো ধরনের যেন জটিলতা সৃষ্টি না হয়, সে জন্য আমরা ঘটনাস্থলকে নিরাপত্তা বেষ্টনীর ভেতরে রেখেছি। প্রয়োজনীয় ইনস্ট্রুমেন্ট এলে আমরা কাজ শুরু করব।’
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখ আরও বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে এই নারী এখানে একাই বসবাস করছেন। তাই আমরা বিভিন্ন দিক দিয়ে পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত করব। ঘটনাস্থলে কোনো ধরনের জোর-জবরদস্তির আলামত আমরা পাইনি। ঘরে প্রবেশ করার সময় বল প্রয়োগ করার আলামত আমরা পাইনি। ঘরটি সাজানো-গোছানো ছিল।’
পুলিশ সুপার বলেন, সিআইডির ফরেনসিক এক্সপার্ট নমুনা সংগ্রহ শেষে আমরা মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠাব। তার ভিত্তিতে প্রতিবেদন তৈরি করব। তবে তদন্ত অব্যাহত থাকবে। সন্দেহভাজন যারা, তাদের দিকে দৃষ্টি রয়েছে। এটি যদি হত্যাকাণ্ড হয়ে থাকে, তাহলে জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হবে।
তিনি আরও বলেন, একজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। জিজ্ঞাসাবাদের আওতায় আরও অনেকেই আসবে। জিজ্ঞাসাবাদের পর যদি কাউকে আটক করতে হয় করব। কাউকে গ্রেপ্তার করতে হলে করব। গ্রেপ্তার করার পর যদি মনে হয় কাউকে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা জরুরি, সেটাও করব।