সর্বশেষ
প্রচ্ছদ / হাওরাঞ্চল / কিশোরগঞ্জ / মিঠামইনে হাঁস বিক্রয়ের কথা বলে ডাকাতি- আদালতে মূল হোতার স্বীকারোক্তি

মিঠামইনে হাঁস বিক্রয়ের কথা বলে ডাকাতি- আদালতে মূল হোতার স্বীকারোক্তি

নিজস্ব সংবাদদাতা : কিশোরগঞ্জের মিঠামইনে হাওরে হাঁস বিক্রয়ের কথা বলে ডাকাতির ঘটনায় গ্রেফতারকৃত নৌ ডাকাত সর্দার আল ইসলাম (৪৭) আদালতে স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
আজ বৃহস্পতিবার (১২ অক্টোবর) বিকেলে কিশোরগঞ্জের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. আশিকুর রহমানের আদালতে ১৬৪ ধারায় নৌ ডাকাতির মূল হোতা বলে স্বীকার করেন তিনি।

এর আগে বুধবার (১১ অক্টোবর) রাতে নরসিংদী জেলার মধাবদী উপজেলা থেকে গ্রেফতার করে কিশোরগঞ্জ পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) সদস্যরা। গ্রেফতার সর্দার আল ইসলাম হবিগঞ্জ জেলার আজমিরীগঞ্জ উপজেলার বিরাট ভাটিপাড়া গ্রামের মৃত হাফিজ উদ্দিনের ছেলে। বৃহস্পতিবার (১২ অক্টোবর) সন্ধ্যায় কিশোরগঞ্জ পিবিআই এর পরিদর্শক মোহাম্মদ জামির হোসেন জিয়া এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, আসামি সর্দার আল ইসলাম, কামাল, আবু বক্কর ছিদ্দিক, কবির হোসেন, হাবিব বন্ধু। তাদের সংঘবদ্ধভাবে দীর্ঘদিন যাবত চুরি, ছিনতাই, ডাকাতি করে। গত ১১ আগস্ট সকাল ১০ টার সময় সর্দার আল ইসলাম মোবাইল ফোনে হারিছ মিয়াকে হাঁস কেনার জন্য মিঠামইন জিরো পয়েন্টে আসতে বলেন। হারিছ মিয়া, মোঃ ছেতু মিয়া ও হাঁস ব্যবসায়ি মোশারফ হোসেন হাঁস কেনার জন্য ওইদিন দুপুরে মিঠামইন জিরো পয়েন্টে আসে। পরে তাদের হাঁস দেখানোর কথা বলে জিরো পয়েন্ট থেকে ঢাকী ব্রীজের পাশে নিয়া যায়।

পিবিআই এর পরিদর্শক মোহাম্মদ জামির হোসেন জিয়া জানান, পূর্ব-পরিকল্পনা অনুযায়ী তাদেরকে নৌকায় তুলে নৌকা ভাসিয়ে হাওরের মাঝে নিয়ে চাকু বের করে জড়িয়ে ধরে দরি ও গামছা দিয়ে হাত ও মুখ বেধে ফেলে। পরে তাদের কাছ থেকে নগদ ১ লাখ ৭ হাজার টাকা এবং ৩ টি মোবাইল ফোন ও ২টি এনড্রয়েড মোবাইল ফোন কেড়ে নেয়। এ সময় প্রাণনাশের ভয় দেখিয়ে ছেতু মিয়ার বিকাশ নাম্বারে ৫০ হাজার টাকা, হারিছ মিয়ার বিকাশ নাম্বারে ৩০ হাজার টাকা এবং মোশারফ হোসেনের বিকাশ নাম্বারে ৫০ হাজার টাকা এনে উত্তোলন করে ডাকাত দলের সদস্যরা। ওইদিন সন্ধ্যার পর ভুক্তভোগীদের হাসিমপুর ও আজমেরীগঞ্জের মাঝামাঝি বিলের মধ্যে বুক পানিতে নামিয়ে চলে যায় ডাকাত দলের সদস্যরা। এ ঘটনায় গত ১১ আগস্ট রাতে ভুক্তভোগী মোঃ ছেতু মিয়া অজ্ঞাতনামা ৭ জনকে আসামি করে মিঠামইন থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।

পরিদর্শক মোহাম্মদ জামির হোসেন জিয়া জানান, ঘটনার ৫ থেকে ৭ দিন আগে কুলিয়ারচর রেল ষ্টেশনে ছেতু মিয়ার মামা শ্বশুর হারিছ মিয়ার সাথে সরদার আল ইসলামের পরিচয় হয় এবং তাদের মধ্যে হাঁস ক্রয় বিক্রয়ের বিষয়ে কথাবার্তা হয়। গত ১১ আগস্ট সকালে অভিযুক্ত ডাকাত আবু বক্কর সিদ্দিকের বাড়িতে বসে ডাকাতি করার পরিকল্পনা করে সর্দার আল ইসলামসহ অন্যান্যরা। এদিকে পরিচয়ের সূত্র ধরে হাঁস কেনার জন্য সর্দার আল ইসলাম হারিছ মিয়াকে মোবাইলে ফোন দেন।

মোহাম্মদ জামির হোসেন জিয়া জানান, গত ২৭ আগস্ট মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পায় কিশোরগঞ্জ পিবিআই। তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় নৌ ডাকাতির মূল হোতা সরদার আল ইসলামকে নরসিংদী থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের পর তার হেফাজতে থাকা ভুক্তভোগী ছেতু মিয়ার মোবাইল ফোন উদ্ধার করে জব্দ করা হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *