নিজস্ব সংবাদদাতা: কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচরে চার বছরের সন্তানকে মারধর করায় স্বপ্না আক্তার নামের এক নারীকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে স্বামী কাউসার মিয়ার বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত কাউসার মিয়াকে গ্রেপ্তারের পর শনিবার (২৯ এপ্রিল) দুপুরে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে।
নিহত স্বপ্না আক্তার (২৫) কুলিয়ারচর রামদী ইউনিয়নের মনোহরপুর গ্রামের মরম আলীর কন্যা। এর আগে শুক্রবার সন্ধ্যায় নিহত স্বপ্না আক্তারের বাবা মরম আলী বাদী হয়ে কুলিয়ারচর থানায় তিনজনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। মামলার অন্য আসামিরা হলেন, কাউসার মিয়ার ছোট ভাই ইউসুফ মিয়া (২৪) ও ইউসুফ মিয়ার স্ত্রী রুপা বেগম (২০)।
পুলিশ জানায়, নিহত স্বপ্না আক্তার গত সাত বছর পূর্বে সালুয়া ইউনিয়নে চরকামালপুর গ্রামের মৃত জিল্লু মিয়ার ছেলে কাউসার মিয়ার সাথে বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে তাদের সংসার ভালোই চলছিলো। এর মধ্যে গত ২৬ এপ্রিল তাদের একমাত্র সন্তান আরাবী (৪) তার আপন ছোট চাচা ইউছুফ মিয়ার ঘরে ঢুকে তাদের ব্যবহারের টুথপেস্ট নষ্ট করে ফেলে। এ নিয়ে ইউছুফ মিয়ার স্ত্রী রুপা বেগম আরাবীর মা স্বপ্না আক্তারকে গালিগালাজ করে। এতে স্বপ্না আক্তার রাগে ছেলে আরাবীকে মারধর করে। এ সময় স্বামী কাউসার মিয়া ছেলেকে মারতে দেখে স্ত্রীকে শাসন করে। একপর্যায়ে স্ত্রীকে এলোপাতাড়ি কিল-ঘুষি ও লাথি মারেন কাউসার। আর এতেই স্বপ্না আক্তার মাটিতে লুটিয়ে পড়েন।
পরে স্বপ্না আক্তারকে স্বামী কাউসার মিয়াই স্থানীয় কুলিয়ারচর উপজেলা সরকারি হসপিটালে নিয়ে আসলে তাকে সেখানকার দায়িত্বরত চিকিৎসক তাকে ভাগলপুর জহুরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ এন্ড হাসপাতালে স্থানান্তর করেন। পরে সেখানকার চিকিৎসক আরো উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেলে স্থানান্তর করেন। সর্বশেষ ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় শুক্রবার (২৮ এপ্রিল) সকালে স্বপ্না আক্তারের মৃত্যু হয়। নিহতের পরিবার ঢাকা মেডিকেলে কর্তৃপক্ষ বরাত দিয়ে জানা যায়, পেটে আঘাতে ফলে স্বপ্না আক্তারের পেটে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয় আর রক্তক্ষরণে তার মৃত্যু হয়।
স্বামী কাউসার মিয়া বলেন, গত তিন মাস আগে স্বপ্না আক্তারের এব্রোশন করা হয়েছিলো। সেদিন ছেলেকে মারধরের পর অনাকাঙ্ক্ষিতভাবেই ঘটনাটি ঘটে।
কুলিয়ারচর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফা বলেন, অভিযোগের পর রাতেই ময়মনসিংহের কোতোয়ালী থানার চরপাড়া এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে প্রধান আসামী কাউসার মিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং শনিবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।