নিজস্ব সংবাদদাতা : অবেশেষে নির্বাচন থেকে ছিটকে পড়লেন কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম উপজেলার কাস্তুল ইউনিয়নের গ্রেপ্তারি পরোয়ানাভুক্ত সেই চেয়ারম্যান প্রার্থী ম. সাজন উদ্দিন ভূঁইয়া সাজন। গত ৩০ ডিসেম্বর সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট ডিভিশন এক রিট পিটিশন আমলে নিয়ে চেয়ারম্যান প্রার্থী সাজনের মনোনয়নপত্রের বৈধতার ওপর ছয় মাসের স্থগিতাদেশ দেন বিচারপতি মামনুন রহমান ও বিচারপতি খন্দকার দিলিরুজ্জামান। এই আদেশের ফলে আগামী ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠেয় ইউপি নির্বাচনে তিনি আর চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে বিবেচিত হবেন না বলে জানিয়েছেন জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা।
একই সঙ্গে আদালত কিশোরগঞ্জ জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও আপিল কর্তৃপক্ষ মোহাম্মদ আশ্রাফুল আলমকে ‘কেন তিনি ওই প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করলেন’ বিষয়ে কারণ দর্শানোর আদেশ দেওয়া হয়েছে। আদেশে আগামী ২৬ জানুয়ারি বা এর আগে এ নির্বাচন কর্মকর্তাকে কারণ দর্শানোর জন্য বলা হয়।
এ অবস্থায় করণীয় জানাতে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সচিব বরাবরে ২ জানুয়ারি চিঠি দিয়েছেন কিশোরগঞ্জ জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা।
জানা গেছে, কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম উপজেলার কাস্তুল ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী ছিলেন। তাঁর প্রতীক ছিল মোটরসাইকেল। তবে একটি মামলায় এক বছরের কারাদণ্ড ও ১০ লাখ টাকা জরিমানা হয়েছিল তাঁর। ছিল আদালতের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা।
জেলা নির্বাচন অফিসারের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত ১২ ডিসেম্বর মনোনয়ন বাছাইয়ে কাস্তুল ইউনিয়নের রিটার্নিং অফিসার ও অষ্টগ্রাম উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা রাজাউল করিম ভূঁইয়া এ প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল করেন। তখন রিটার্নিং কর্মকর্তা জানিয়েছিলেন, তিনি (সাজন) দুটি মামলার গ্রেপ্তারি পরোয়ানাভুক্ত আসামি হওয়ায় তাঁর মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়। এরপর আপিল কর্তৃপক্ষ, জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কাছে আপিল করা হলে ১৮ ডিসেম্বর সাজন উদ্দিন ভূঁইয়ার মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করার পর তাঁকে প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হয়। গ্রেপ্তারি পরোয়ানার আসামি হয়েও তাঁর মনোনয়ন কিভাবে বৈধ ঘোষণা হলো, এসব নিয়ে এলাকার সচেতন মহলের মধ্যে নানা প্রশ্ন ও অভিযোগ থাকলেও তাঁর বিরুদ্ধে পুলিশও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। এ সুযোগে তিনি প্রচার-প্রচারণা ও সভা-সমাবেশ-মিছিল করে যাচ্ছিলেন।
এ পরিস্থিতিতে কাস্তুল ইউনিয়নের আরেক চেয়ারম্যান প্রার্থী আমিনুল হক সুজন গত ২৯ ডিসেম্বর সাজন উদ্দিন ভূঁইয়ার মনোনয়নপত্রের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট ডিভিশনে একটি রিট পিটিশন করেন (রিট নম্বর : ১৩২৬৯/২০২১)। এই পরিপ্রেক্ষিতে আদালত সাজন উদ্দিন ভূঁইয়ার মনোনয়নপত্রের বৈধতার ওপর ছয় মাসের স্থগিতাদেশ দেন।
এ বিষয়ে কথা বলতে ম. সাজন উদ্দিন ভূঁইয়ার সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন ধরেননি।
চেয়ারম্যান প্রার্থীর মনোনয়নপত্রের বৈধতা স্থগিতের বিষয়টি নিশ্চিত করে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ আশ্রাফুল আলম বলেছেন, হাইকোর্ট ডিভিশনে আরেক চেয়ারম্যান প্রার্থীর রিটের কারণে আদালত এ আদেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন, এখন ব্যালট পেপারও চলে এসেছে। নির্বাচন ওই প্রার্থীর প্রতীকসহ হবে, নাকি প্রতীক ছাড়া হবে, করণীয় জানতে কমিশন বরাবর চিঠি দেওয়া হয়েছে। যে নির্দেশনা আসবে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।