নিজস্ব সংবাদদাতা : কিশোরগঞ্জের হাওরে সারা বছর চলাচল উপযোগী অলওয়েদার রোড নির্মাণে ২২৬ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়। কিন্তু প্রশাসনিক জটিলতাসহ নানা কারণে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক রাস্তা নির্মাণের সময় ক্ষতিপূরণের টাকা পায়নি। টাকা না পেয়েও রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের আশ্বাসে হাওর অধ্যুষিত ইটনা, মিঠামইন ও অষ্টগ্রামের কৃষকরা তাদের জমি রাস্তা নির্মাণের জন্য ছেড়ে দেয়। তাদের ছেড়ে দেওয়া জমিতে ৮৭৪ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয় প্রায় ৩০কিলোমিটার ‘আভুরা’ সড়ক।
দীর্ঘ আড়াই বছর পর সেই ক্ষতিপূরণের টাকার চেক আজ মঙ্গলবার থেকে বিতরণ শুরু করেছে জেলা প্রশাসন। এ চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের জনবিভাগের সচিব সম্পদ বড়ুয়া ও প্রেস সচিব মো. জয়নাল আবেদীন। তারা তাদের বক্তব্যে কৃষকদের ত্যাগ, রাষ্ট্রপতির আশ্বাসের প্রতি আস্থা রাখায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের ধন্যবাদ জানান। তাছাড়া সামনে আরও যে উন্নয়ন কর্মকা- হবে সেগুলোতে সবার সহযোগিতা কমনা করেন।
মিঠামইনে ইটনা-মিঠামইন-অষ্টগ্রাম সড়ক প্রকল্প ও মিঠামইন সেনানিবাসের ভূমি অধিগ্রহণের চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, কিশোরগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য, রাষ্ট্রপতির বড় ছেলে রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিক। তিনি প্রধান অতিথির বক্তব্যে বলেন, হাওরের উন্নয়ন আজ দৃশ্যমান। এখন সারা দেশের সঙ্গে সড়ক পথে যুক্ত হওয়ার দ্বারপ্রান্তে রয়েছে এই হাওর এলাকা। হাওরকে দেশ ও বিশ্বের আরও কাছে আনতে উড়াল সেতুসহ নানাবিধ পরিকল্পনা করা হচ্ছে। আশা করি সেই স্বপ্নও পূরণ হবে।
আজ মঙ্গলবার (২২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে মিঠামনে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক মো. সারওয়ার মুর্শেদ চৌধুরী। অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তৃতা করেন, পুলিশ সুপার মো. মাশরুকুর রহমান খালেদ, মিঠামইন উপজেলা চেয়ারম্যান আছিয়া আলম, মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হক সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মো. আবদুল হক, ইটনা-মিঠামইন-অষ্টগ্রাম সড়কের প্রাক্তন প্রকল্প পরিচালক মো. মনিরুল ইসলাম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) দুলাল চন্দ্র সূত্রধর, অষ্টগ্রাম উপজেলা চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম জেমস, ইটনা উপজেলা চেয়ারম্যান চৌধুরী কামরুল হাসান, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি শাহ আজিজুল হক প্রমুখ। চেক বিতরণ অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন মিঠামইন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রভাংশু সোম মহান।
জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, অল ওয়েদার রোডের জন্য অধিগ্রহণ করা ২২৬ একর জমির জন্য ক্ষতিপূরণ বাবদ ৮৭৮জনকে দেওয়া হচ্ছে ২৩ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। তাদের পুনর্বাসনের জন্য দেওয়া হচ্ছে আরো ২৩ কোটি টাকা। আর মিঠামইন সেনানিবাসের জন্য অধিগ্রহণ করা ২২৫ দশমিক ৫৪ একর জমির জন্য ৫২১জন ক্ষতিগ্রস্তকে দেওয়া হচ্ছে ৪৯ কোটি ২৭ লাখ টাকা। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(রাজস্ব) দুলাল চন্দ্র সূত্রধর জানান, আজ আনুষ্ঠানিক চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে ৯৮জন ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের মাঝে ৬ কোটি টাকার চেক বিতরণ করা হয়। বাকিদের টাকা পর্যায়ক্রমে বিতরণ করা হবে।
বাজিতপুর এর সাথে সংযোগ স্থাপন করলে দুটি উপজেলার জনগন উপকৃত হবেন এবং আন্ত যোগাযোগ বৃদ্ধি সেই সাথে দুই উপজেলার ই ব্যবসায়িক প্রসার বাড়বে বলে আশা করা যাচ্ছে। আর তাছাড়া শেষ স্বপ্ন হিসেবে হাওর জেলা করতে হলেও এই রাস্তা অনেকাংশে জরুরী বলে আশা করা যায়।