নিজস্ব সংবাদদাতা : কিশোরগঞ্জের ভৈরবে জ্বর–শ্বাসকষ্ট নিয়ে অমিয় দাস (৬০) নামের এক মাছ ব্যবসায়ী মারা গেছেন। গতকাল শুক্রবার রাত ১১টার দিকে সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর তাঁর মৃত্যু হয়।
রাত তিনটার দিকে অমিয় দাসের মরদেহ পৌর শহরের পঞ্চবটি শ্মশানে সৎকারের জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। তখন স্থানীয় কিছু মানুষ সৎকারে বাধা দেন। আজ শনিবার ভোরে সৎকারকাজে সহযোগিতার জন্য এগিয়ে আসেন স্থানীয় মসজিদের মুসল্লিরা।
মৃত ব্যক্তির পরিবারের সদস্যরা বলেন, অমিয় দাস ভৈরব নৈশ মৎস্য আড়তের একজন প্রবীণ ও প্রতিষ্ঠিত মাছ ব্যবসায়ী। বাড়ি পৌর শহরের চন্ডিবের দক্ষিণপাড়ায়। স্থানীয়ভাবে তিনি শিক্ষানুরাগী ও সমাজকর্মী হিসেবে পরিচিত। বেশ কয়েক বছর ধরে তিনি অসুস্থ। এক সপ্তাহ ধরে তিনি সর্দি, জ্বর ও শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন। তিনি করোনাভাইরাসে সংক্রমিত কিনা জানতে গত বৃহস্পতিবারতাঁর নমুনা সংগ্রহ করা হয়। গতকাল সন্ধ্যার পর থেকে তাঁর শ্বাসকষ্ট বাড়তে থাকে। তখন চিকিৎসকের পরামর্শে তাঁকে সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। হাসপাতালে নেওয়ার কিছুক্ষণ পর তিনি মারা যান।
মৃতের স্বজন সত্যজিৎ দাস বলেন, শ্মশানের উদ্দেশে মরদেহটি একটি মাইক্রোবাসে করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। পঞ্চবটি এলাকায় কয়েকজন গাড়িটি আটকে দেয় এবং দাহ করতে দেবে না বলে জানান। গাড়িটি ফিরিয়ে নেওয়া হচ্ছিল। পাশের মসজিদে তখন ফজরের নামাজ চলছিল। নামাজ শেষে মুসল্লিরা বিষয়টি জানতে পেরে সহযোগিতার জন্য এগিয়ে আসেন।
সৎকারে সহযোগিতা করতে সামনের সারিতে ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এনামুল হক। তিনি পঞ্চবটির স্থানীয় বাসিন্দা। তিনি বলেন, ‘সৎকারে বাধা দেওয়ার কথা শুনে এগিয়ে যাই। আমাদের উপস্থিতি টের পেয়ে বাধাদানকারীরা সটকে পড়েন।’ তিনি মুসল্লিদের ভূমিকার প্রশংসা করেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা বুলবুল আহমেদ বলেন, ভৈরবে এখন পর্যন্ত ৫৯ জনের শরীরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। কিন্তু কোনো মৃত্যুর ঘটনা নেই। অমিয় দাসের শরীরে করোনাভাইরাস সংক্রমণের উপসর্গ ছিল। তাই তাঁর সৎকার প্রক্রিয়া স্বাস্থ্যবিধি মেনে করা হয়েছে।