নিজস্ব সংবাদদাতা : দেশের প্রখ্যাত আলেম কিশোরগঞ্জের শহীদী মসজিদের খতিব ও আল জামিয়াতুল ইমদাদিয়া মাদরাসার মহাপরিচালক এবং কওমি মাদরাসা বোর্ডের সহসভাপতি আল্লামা আযহার আলী আনোয়ার শাহের জানাজা ঐতিহ্যবাহী শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
তার জানাজায় অংশ নিয়েছেন প্রায় পাঁচ লাখ মুসল্লি। তিন লাখ মানুষের ধারণক্ষমতাসম্পন্ন ঐতিহ্যবাহী শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দান পরিপূর্ণ হয়ে চারপাশের রাস্তা এবং আশপাশের মাঠ জনস্রোতে রূপ নেয়।
বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) বাদ জোহর তার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। বিভিন্ন অঞ্চলের পাঁচ লাখ মুসল্লি ও উলামায়ে কেরাম এতে অংশ নেন। মরহুম আনোয়ার শাহের ছেলে মাওলানা আনোয়ার শাহ তানিম বাবার জানাজায় ইমামতি করেন। জানাজা শেষে শোলাকিয়া বাগে জান্নাত গোরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
জানাজায় অংশ নিয়েছেন কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক (ডিসি) সারওয়ার মুর্শেদ চৌধুরী, পুলিশ সুপার (এসপি) মাশরুকুর রহমান খালেদ, প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী কৃষিবিদ মশিউর রহমান হুমায়ুন, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট কামরুল আহসান শাহজাহানসহ শহরের বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সামাজিক-ইসলামিক সংগঠনের নেতাকর্মী।
দেশের প্রখ্যাত আলেম আনোয়ার শাহের জানাজায় অংশ নিতে সকাল থেকে লাখ লাখ মানুষ শোলাকিয়া মাঠে আসতে থাকেন। দুপুর নাগাদ তিন লাখ মানুষের ধারণক্ষমতাসম্পন্ন ঐতিহ্যবাহী শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দান কানায় কানায় ভরে যায়। মাঠের বাইরে সবগুলো রাস্তায় ও পেছনের মাঠে দাঁড়িয়ে নামাজ পড়েন আরও দুই লাখ মানুষ। সবমিলে তার জানাজায় অংশ নিয়েছেন পাঁচ লাখ মানুষ। জানাজা শেষে এই আলেমের জন্য কান্নায় ভেঙে পড়েন অনেক মুসল্লি।
বুধবার (২৯ জানুয়ারি) বিকেল ৫টার দিকে ঢাকার ইবনে সিনা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান আনোয়ার শাহ। দীর্ঘদিন ধরে ক্যানসারে আক্রান্ত ছিলেন তিনি। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৩ বছর। দুই ছেলে ও দুই মেয়েসহ অসংখ্য আত্মীয়-স্বজন রেখে গেছেন আল্লামা আনোয়ার শাহ।
এর আগে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে গত শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) তাকে ঢাকার ইবনে সিনা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার আরও অবনতি হলে মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) ভোররাতে তাকে ভেন্টিলেশনে রাখা হয়। বুধবার বিকেল ৫টার দিকে মৃত্যু হয় তার
আল্লামা আনোয়ার শাহ কওমি মাদরাসার সর্বোচ্চ সংস্থা হাইয়াতুল উলইয়া লিল জামিয়াতিল কওমিয়া বাংলাদেশের সদস্য, বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়ার (বেফাক) সহসভাপতি এবং কিশোরগঞ্জ জামিয়া ইমদাদিয়ার মহাপরিচালক ছিলেন।
প্রাজ্ঞ আলেম, সুবক্তা, চমৎকার কোরআন তিলাওয়াত ও মুফাসফিরে কোরআন হিসেবে মাওলানা আনোয়ার শাহ দেশব্যাপী পরিচিত ছিলেন। উপমহাদেশের বিখ্যাত হাদিসবিশারদ ও আধ্যাত্মিক আলেম ও বিশিষ্ট রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব মাওলানা আতহার আলীর (রহ.) সন্তান ছিলেন আনোয়ার শাহ।