সর্বশেষ
প্রচ্ছদ / বাংলাদেশ / জাতীয় / সরকারী প্রাইমারীর প্রাক প্রাথমিকে নিয়োগ হবে আরও ২৬ হাজার শিক্ষক

সরকারী প্রাইমারীর প্রাক প্রাথমিকে নিয়োগ হবে আরও ২৬ হাজার শিক্ষক

হাওর বাংলা ডেস্ক : জাতীয়করণ হওয়া দেশের ২৬ হাজার সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রাক-প্রাথমিক পর্যায়ে বড় নিয়োগ আসছে। আগামী ডিসেম্বরে প্রাথমিক স্তরে সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার পরপরই প্রাক-প্রাথমিকে নিয়োগ হবে ২৬ হাজার শিক্ষক। জাতীয়করণের আওতায় আসা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রত্যেকটির প্রাক-প্রাথমিক স্তরে একজন করে সহকারী শিক্ষক নিয়োগ দেয়ার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়ে ইতোমধ্যেই কাজ শুরু করেছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। তবে তার আগেই প্রাথমিক স্তরে ১২ হাজার শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। গত ৩০ জুলাইয়ের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি অনুসারে এ নিয়োগ পরীক্ষা ডিসেম্বরে নেয়ার বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে মন্ত্রণালয়।

মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, প্রাথমিক স্তরের শিক্ষার মান বাড়াতেই সরকার দেশের প্রতিটি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রাক-প্রাথমিক স্তরে শিক্ষক নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ইতোমধ্যে পুরনো সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৩৭ হাজার ৮৯৫ জন প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এবার জাতীয়করণ হওয়া ২৬ হাজার প্রতিষ্ঠানে এ পদে শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হবে। জানা গেছে, প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন প্রকল্প-৪ (পিইডিপি-৪) এর আওতায় কয়েকটি ধাপে এসব শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হতে পারে। প্রথমে পিইডিপির আওতায় এ শিক্ষকদের নিয়োগ দেয়া হলেও প্রকল্পের মেয়াদ শেষে তাদের রাজস্ব খাতভুক্ত করা হবে।

প্রাক-প্রাথমিক পদে নিয়োগ পাওয়া শিক্ষকরা সহকারী শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পাবেন। ইতোমধ্যেই প্রাথমিক শিক্ষক অধিদফতর (ডিপিই) থেকে ২৬ হাজার ১৫৯টি বিদ্যালয়ে এ স্তরের শিক্ষক নিয়োগ দিতে চাহিদাপত্র তৈরি করে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে। এরপর তা জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পদ সৃজনের জন্য পাঠানো হয়। শিক্ষকদের পদসৃজন হলে তা অর্থ মন্ত্রণালয়ে অর্থ ছাড়ে পাঠানো হবে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।

সারাদেশে ৬৫ হাজার ৯৯টি সরকারী বিদ্যালয় রয়েছে। তার মধ্যে পুরনো সরকারী বিদ্যালয়ের সংখ্যা ৩৭ হাজার ৬৭২টি এবং নতুন জাতীয়করণ হওয়া ২৬ হাজার ১৫৯টি বিদ্যালয় রয়েছে। পুরনো সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে রাজস্বখাতভুক্ত প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষক পদে ৩৭ হাজার ৮৯৫ শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হয়েছে। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন) মোঃ গিয়াসউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, প্রাথমিক স্তরের শিক্ষার মান বাড়াতে দেশের প্রতিটি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রাক-প্রাথমিক স্তরে শিক্ষক নিয়োগের নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। পুরনো সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৩৭ হাজার ৮৯৫ জন প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হয়েছে আগেই। এখন জাতীয়করণ হওয়া ২৬ হাজার প্রতিষ্ঠানে এ পদে শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হবে।

এদিকে পিইডিপি-৪ এর কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এ প্রকল্পে এক লাখ শিক্ষক নিয়োগের প্রস্তাবনা রয়েছে। তার মধ্যে প্রাক-প্রাথমিক, সঙ্গীত ও শরীরচর্চা বিষয়ের শিক্ষক রয়েছে। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সকল শিক্ষককে নিয়োগের পর প্রাক-প্রাথমিক পর্যায়ের শিক্ষা বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেয়া হবে।

এদিকে মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, গত ৩০ জুলাইয়ের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি অনুসারে ১০ হাজার শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষা ডিসেম্বরে নেয়ার বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে মন্ত্রণালয়। সকল জেলায় একসঙ্গে পরীক্ষা না নিয়ে ধাপে ধাপে কয়েকটি জেলায় একত্রিতভাবে পরীক্ষা নেয়া হবে। প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান পরীক্ষা আয়োজনের বিষয়ে বলেছেন, দীর্ঘদিন মামলার কারণে রাজস্ব খাতের শূন্য পদে শিক্ষক নিয়োগ দেয়া যায়নি। এ মাসের মধ্যেই সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা শুরুর চিন্তা-ভাবনা থাকলেও ওএমআর ফরমসহ অন্যান্য দ্রব্যাদি কেনাকাটায় সরকারী ক্রয় আইন (পিপিআর) অনুসরণ করতে গিয়ে গতি কিছুটা কমে গেছে।

যেহেতু নবেম্বরে দুটি বড় পরীক্ষা আছে, তাই পরীক্ষার হল পাওয়া যাচ্ছে না। এছাড়া রেকর্ডসংখ্যক প্রার্থীর আবেদন ও পরীক্ষার হল সঙ্কটের কারণে একসঙ্গে সারাদেশে পরীক্ষা নেয়া যাচ্ছে না। এ কারণে পরীক্ষা ডিসেম্বরে নেয়া হবে। হল পাওয়া গেলে ৩ বা চারটি করে জেলায় একসঙ্গে পরীক্ষা নেয়াও হতে পারে।

সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ১২ হাজার শিক্ষক নিয়োগের জন্য ৩০ জুলাই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। গত ১-৩০ আগস্ট অনলাইনে আবেদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়, যেখানে ২৪ লাখ ১ হাজার ৫৯৭ প্রার্থী আবেদন করেন। নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র প্রণয়ন করা হবে ডিজিটাল পদ্ধতিতে। পরীক্ষার সময়সূচী, ওএমআর ফরম ডিজাইন ও মূল্যায়ন, ফলাফল প্রক্রিয়াকরণ ও প্রকাশ এবং পরীক্ষা কেন্দ্রের আসন বিন্যাসের পদ্ধতি উন্নয়ন বিষয়েও সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে বুয়েটের সঙ্গে বৈঠক করেছে মন্ত্রণালয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *