হাওর বাংলা ডেস্ক : বাংলাদেশের রাজনীতিতে সক্রিয় ভাবে জড়িয়ে পড়ার পর থেকেই বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ইস্যুতে একাধিক বার বাংলাদেশের মহান সংবিধান অবমাননা করেছেন বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারপারসন তারেক রহমান। এছাড়া বিভিন্ন ইস্যুতে আদালতের দেওয়া রায় নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করে বিভিন্ন সময় আদালত অবমাননাও করেছেন তারেক।
এরই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি লন্ডনে একটি পাঁচ তারকা হোটেলে বিএনপি আয়োজিত এক ইফতার পার্টিতে আবারো সংবিধান অবমাননা করেছেন তারেক। দলের ইফতার পার্টিতে তারেক তার বক্তব্য প্রদানকালে বর্তমান সরকারের অর্থমন্ত্রীকে অবৈধ মন্ত্রী বলে মন্তব্য করেছেন। পাশাপাশি ক্ষমতাসীন সরকারকেও অবৈধ বলে মন্তব্য করেছেন। অথচ বর্তমান ক্ষমতাসীন সরকার সংবিধান অনুযায়ী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়ী হয়ে সরকার গঠন করেছে।
বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী জাতীয় সংসদের মেয়াদ শেষ হওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করতে হবে। এটা সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা। কোন অবস্থাতেই এই নিয়মের বাইরে যাওয়া যাবে না। সংবিধানের ১২৩ (৩) (ক) ধারাতে বলা আছে, সংসদের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগের ৯০ দিনের মধ্যে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
তাই সাংবিধানিকভাবে নির্বাচিত সরকারকে অবৈধ বলার মধ্য দিয়ে মূলত বাংলাদেশের সংবিধানকেই অবৈধ ঘোষণা করেছেন বলে মত দিয়েছেন একাধিক সংবিধান বিশেষজ্ঞ। তাদের মতে বাংলাদেশের সংবিধানকে কেউ অবৈধ কিংবা অস্বীকার করলে তার বাংলাদেশে রাজনীতি করার কোনো সাংবিধানিক অধিকার থাকে না।
অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিতের সাম্প্রতিক সময়ের একটি মন্তব্যের অপব্যাখ্যাও করেছেন তারেক। বাজেটের ব্যাপারে অর্থমন্ত্রী কথা বলতে গিয়ে বলেছিলেন, বিগত দশ বছরে বাজেট উত্থাপনের পর যেহেতু জিনিসপত্রের দাম বাড়েনি তাই এবারও জিনিসপত্রের দাম বাড়বে না। কিন্তু তারেক তার বক্তব্যে অর্থমন্ত্রীর এই মন্তব্যকে ব্যাখ্যা করেছেন এইভাবে যে, অর্থমন্ত্রী বলেছেন গত দশ বছরে কোনো জিনিসপত্রের দাম বাড়েনি।
এছাড়া তারেক তার বক্তব্যে বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারকে আন্তর্জাতিক ভাবে দুর্নীতিবাজ ও সন্ত্রাসী দল বলেও আখ্যা দিয়েছেন। অথচ সম্প্রতি কানাডার ফেডারেল আদালত একাধিকবার বিএনপিকে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী দল হিসেবে রায় দিয়েছে। শুধু তাই নয়, আমেরিকার কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই তারেককে আন্তর্জাতিক ভাবে শীর্ষ সন্ত্রাসী হিসেবে আখ্যা দিয়েছে। এমনকি এফবিআই তারেক জিয়াকে যুক্তরাজ্যের জন্য বিপজ্জনক বলে বিবৃতি দিয়ে যুক্তরাজ্য সরকারকে সতর্কও করেছিল। ২০০১-২০০৫ এই সময়ে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক ভাবে টানা ৫ বার চ্যাম্পিয়ন(!) হয়েছিল। ওই সময় রাষ্ট্র ক্ষমতায় ছিল বিএনপি।
আন্তর্জাতিক ভাবে দুর্নীতিবাজ এবং সন্ত্রাসী দল হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়া একটি রাজনৈতিক দলের কর্ণধার হয়ে দুর্নীতি কিংবা সন্ত্রাস নিয়ে কথা বলাটা কিছুটা বেমানানই বটে।