হাওর বাংলা ডেস্ক : বিনা প্রয়োজনে রোগীদের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে ব্যবস্থাপত্র না দিতে চিকিৎসকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। তিনি বলেছেন, অনেক রোগীর চিকিৎসা ব্যয় বহন করার সামর্থ্য নেই। চিকিৎসার নামে অনেক রোগী হয়রানির শিকার হন। এক শ্রেণীর চিকিৎসক রয়েছেন যারা বিনা প্রয়োজনে রোগীদের মেডিকেল টেস্ট করাতে দেন। এটা ঠিক নয়। প্রয়োজন ছাড়া কাউকে টেস্ট করতে দেবেন না।
শনিবার (৩১ মার্চ) বিকেলে রাজধানীর একটি অভিজাত হোটেলে বাংলাদেশ চিকিৎসক সমিতি (এপিবি) আয়োজিত এক সেমিনারে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এসব কথা বলেন।
চিকিৎসা সেবা দেওয়ার সময় রোগীর সক্ষমতা বিবেচনায় রাখতে চিকিৎসকসহ সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, অনেক রোগী বিভিন্ন ডায়াগনস্টিক সেন্টারের অপ্রয়োজনীয় টেস্টের ব্যয়ভার বহন করতে সক্ষম নন। চিকিৎসা পেশা একটি মহৎ পেশা, এ পেশার মাধ্যমে স্বাস্থ্য সেবা ও পেশার মান নিশ্চিত করতে মেডিকেল এথিক্স কোড মেনে চলতে হবে। সম্প্রতি প্রকাশিত বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনের কথা উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, কিছু কিছু ঘটনায় দেখা যাচ্ছে, জনগণ চিকিৎসকের ভুল চিকিৎসা অথবা তার চিকিৎসা অবহেলার শিকার হচ্ছেন। এতে চিকিৎসকের ও সংশ্লিষ্ট চিকিৎসা কেন্দ্রের ভাবমূর্তিও ক্ষুণ্ন হচ্ছে।
চিকিৎসকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনাদের ভুল চিকিৎসার ব্যাপারে সর্তক হতে হবে। চিকিৎসা ব্যবস্থা ও ওষুধ দিন দিন আধুনিকায়ন হচ্ছে। তাই সর্বশেষ প্রযুক্তি ও আবিষ্কার সম্পর্কে নিজেকে আরো বেশি দক্ষ ও সমৃদ্ধ করে তুলতে হবে। ‘দেশ ও অঞ্চল ভেদে রোগের ধরণ ভিন্ন হবার পাশাপাশি জলবায়ু পরির্বতনের কারণে রোগের ধরণ পরিবর্তন হতে পারে। এ সব বিষয় বিবেচনায় রেখেই মেডিকেল চিকিৎসা ও গবেষণা কার্য পরিচালনা করতে হবে।’ জনগণের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্য সেবা পৌঁছে দিতে বর্তমান সরকারের উদ্যোগের বেশ প্রশংসা করেন তিনি।
রাষ্ট্রপতি বলেন, আগামী দিনগুলোতে জনগণের কাঙ্ক্ষিত স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট সবার যৌথ প্রচেষ্টা সহায়ক ভূমিকা রাখবে বলে আমি মনে করি।
তিনি বলেন, একজন রোগী হলেন হাসপাতালের অতিথি। এ জন্য রোগীদের বিশেষ যত্ন নিতে হবে, যেন কেউ আপনার আচরণে কষ্ট না পান। তাই পেশাদারিত্ব মনোভাব নিয়ে কাজ করতে হবে।
অনুষ্ঠানে চিকিৎসা সেবায় অসাধারণ অবদান রাখার স্বীকৃতি হিসেবে অধ্যাপক ডা. খাজা নিজাম উদ্দিন (মেডিসিন) ও অধ্যাপক ডা. ফিরোজ আহমেদ কোরাইশীকে (নিউরো-মেডিসিন) স্বর্ণ পদক দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) সভাপতি মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া, এপিবি সভাপতি অধ্যাপক এম আজিজুল কাহহার, এপিবি মহাসচিব ডা. এসএম মোস্তফা জামান প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
সুত্র : বাংলানিউজ টোয়েন্টিফোর ডট কম