হাওর বাংলা ডেস্ক : সিলেটে অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবালের ওপর হামলাকারী ফয়জুল হাসানের বন্ধু সোহাগ মিয়াকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাত দিনের হেফাজতে নেওয়ার অনুমতি পেয়েছে পুলিশ। সোমবার দুপুরে সিলেট মুখ্য মহানগর হাকিম সাইফুজ্জামান হিরোর আদালতে হাজির করা হলে শুনানি শেষে তিনি এ আদেশ দেন বলে আদালত পুলিশের সহকারী কমিশনার অমুল্য কুমার চৌধুরী জানান।
গত ৩ মার্চ বিকালে সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের মুক্তমঞ্চে এক অনুষ্ঠান চলাকালে মাদ্রাসা ছাত্র ফয়জুল হাসান ওরফে শফিকুর জাফর ইকবালের ওপর হামলা চালান। ঘটনার পরপরই শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা তাকে ধরে পিটুনি দিয়ে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে হস্তান্তর করেন।
কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক জাফর ইকবালকে প্রথমে নেওয়া হয় সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে অস্ত্রোপচার শেষে রাতেই তাকে পাঠানো হয় ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে।
এ ঘটনায় ফয়জুলসহ অজ্ঞাতপরিচয় কয়েকজনকে আসামি করে পরদিন সিলেটের জালালাবাদ থানায় মামলা করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
অমুল্য বলেন, ফয়জুলকে জঙ্গিবাদে উদ্বুদ্ধ করার অভিযোগে সোহাগকে রোববার রাতে সিলেট নগরীর কালিবাড়ি এলাকা থেকে আটক করে পুলিশ। তার সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করলে শুনানি শেষে আদালত মঞ্জুর করেন।
সুনামগঞ্জের দিরাইয়ের সাদিকুর রহমানের ছেলে ২৪ বছর বয়সী সোহাগ মিয়ার কাছ থেকে ফয়জুলের ব্যবহৃত একটি কম্পিউটারও জব্দ করা হয়েছে বলে অমুল্য জানান।
জঙ্গিবাদ ও সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে অবস্থানের কারণে বহুবার জাফর ইকবালকে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে। সেজন্য সরকারের তরফ থেকে তাকে পুলিশি নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়। ওই নিরাপত্তা বেষ্টনের মধ্যেই এ হামলার ঘটনায় সমালোচনার মুখে পড়ে পুলিশ।
জাফর ইকবাল ‘ইসলামের শত্রু’ বলে মনে করে, এ কারণেই তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা করেছে বলে ফয়জুল হাসান প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশের কাছে স্বীকার করেন। রোববার আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন তিনি।
এর আগে গত ৮ মার্চ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ফয়জুলকে দশ দিনের হেফাজতে নেওয়া হয়। এরপর ১১ মার্চ তার মামা ফজলুর রহমান ও বাবা আতিকুর রহমানকে পাঁচ দিনের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। সবশেষ ১৩ মার্চ তার ভাই এনামুলকে হেফাজতে নেওয়ার অনুমতি দেয় আদালত।