সর্বশেষ
প্রচ্ছদ / হাওরাঞ্চল / কিশোরগঞ্জ / হাতি চাঁদা চেয়েই ক্ষান্ত নয়, শুঁড়ে তুলে আছাড়

হাতি চাঁদা চেয়েই ক্ষান্ত নয়, শুঁড়ে তুলে আছাড়

হাওর বাংলা ডেস্ক : পথ আটকে চাঁদা চাইল চাঁদাবাজির প্রশিক্ষণ পাওয়া হাতি। ইজিবাইকচালক দিতে চাইলেন পাঁচ টাকা, কিন্তু হাতি ১০ টাকার নিচে নেবে না। এ নিয়ে মাহুতের সঙ্গে চালকের বাগ্‌বিতণ্ডা। একপর্যায়ে চালককে শুঁড় দিয়ে শূন্যে তুলে আছাড় দিল ওই হাতি। আছাড় খেয়ে চালক বাতেন এখন মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন।

গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচর উপজেলার আগরপুর উত্তরপাড়ার রাস্তায় এ ঘটনা ঘটে।

ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে হাতি দিয়ে রাস্তাঘাট আর দোকানে চাঁদাবাজির ঘটনা প্রায়ই দেখা যায়। কিন্তু আশানুরূপ চাঁদা না পাওয়ায় কোনো হাতির শুঁড় দিয়ে পেঁচিয়ে তুলে কাউকে আছাড় মারার ঘটনা বিরল।

আগরপুর উত্তরপাড়ার রাস্তা দিয়ে অন্য সব দিনের মতো গতকাল ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক চালাচ্ছিলেন বাতেন। দুপুরে হঠাৎ করে সড়কে এক হাতি দেখে তিনি থামিয়ে দিলেন ইজিবাইক। চালকের দিকে হাতি শুঁড় বাড়িয়ে দিল। মাহুত জানাল, চাঁদা চাইছে সে। বাতেন পাঁচ টাকা দিতে চাইলেন, কিন্তু হাতি নেবে না। ১০ টাকার নিচে নেয় না, জানায় মাহুত।

কিন্তু চালকও নাছোড়বান্দা। পাঁচ টাকার বেশি দেবেন না। এ নিয়ে চালক আর মাহুতের কথা-কাটাকাটি। একপর্যায়ে বাতেন ইজিবাইক নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। এ সময় হাতি ক্ষিপ্ত হয়ে চালককে শুঁড় দিয়ে পেঁচিয়ে গাড়ি থেকে টেনেহিঁচড়ে বের করে আনে। এরপর চালককে কিছুক্ষণ শূন্যে ঘুরিয়ে সজোরে ছুড়ে দেয়। কাছের এক বাড়ির দেয়ালে গিয়ে আছড়ে পড়েন বাতেন। পরে মুমূর্ষু অবস্থায় তাঁকে জহুরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

হাতির চাঁদাবাজি ও তাণ্ডব চালানোর এ ঘটনায় মাহুত এনামুল হককে (১৪) আটক করে থানায় নিয়ে আসে পুলিশ। আর হাতিটিকে মালিকপক্ষের লোকজন এসে নিয়ে যায়। আহত চালক বাতেন আগরপুর এলাকার বাসিন্দা।

প্রত্যক্ষদর্শী ব্যক্তিরা জানান, দুপুরে হাতি নিয়ে এনামুল আগরপুর গ্রামে ঢোকে। হাতিকে দিয়ে দোকানপাট, পথচারী ও চালকদের কাছ টাকা নিচ্ছিল সে। ১০ টাকার কম নিচ্ছিল না এনামুল। ইজিবাইকচালক বাতেনের সঙ্গে সমস্যার সৃষ্টি হয় সে কারণেই। বাতেনকে হাতি যখন শুঁড় দিয়ে পেঁচিয়ে শূন্যে ঘোরাচ্ছিল, তখন সবাই আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। তাঁকে ছুড়ে মারার পর জ্ঞান হারায় মাহুত এনামুল। জনতার তাড়া খেয়ে হাতিটিও দূরে সরে যায়।

এনামুল জানায়, তার বাড়ি গাজীপুর উপজেলার শ্রীপুর উপজেলার কর্ণপুর গ্রামে। ছয় দিন আগে সে হাতি নিয়ে বের হয়। হাতির মালিকের বাড়ি নরসিংদী। নাম কাজল মিয়া। কাজলের সঙ্গে তার চুক্তি হয়, হাতি নিয়ে সে টাকা সংগ্রহ করবে আর বিনিময়ে মাসে পাঁচ হাজার টাকা পাবে। টাকা কম দিলে কিংবা কেউ না দিলে বিষয়টি প্রশিক্ষিত হাতি বুঝতে পারে। সে ক্ষেত্রে হাতিটি মাঝেমধ্যে খেপে যায়।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, একই কারণে হাতিটি এক সপ্তাহের ব্যবধানে নরসিংদীর বেলাব বাজারে দুজনকে শূন্যে ভাসিয়ে ছুড়ে মারে। নারায়ণপুর বাজারেও হাতির চাঁদাবাজির শিকার হয়ে আহত হয় একজন।

কুলিয়ারচর থানার সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) আলী হোসেন জানান, এ ঘটনায় মাহুত এনামুলের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।

সুত্র : প্রথম আলো।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *