সর্বশেষ
প্রচ্ছদ / হাওরাঞ্চল / কিশোরগঞ্জ / নীরব নিস্তব্ধ শোলাকিয়ার মাঠ

নীরব নিস্তব্ধ শোলাকিয়ার মাঠ

টিটু দাস : করোনা মহামারি থমকে দিয়েছে সবকিছু। করোনা মহামারির কারণে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে গত বছরের মতো এবারও ঈদগাহ কিংবা খোলা মাঠে ঈদের জামাত না হওয়ায় খালি পড়ে আছি দেশের সবচেয়ে বড় কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দান।

আজ ঈদুল ফিতরের দিন শোলাকিয়ায় ১৯৪ তম জামাত হওয়ার কথা থাকলেও ধর্ম মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী গত রোববার শোলাকিয়া ঈদগাহ পরিচালনা কমিটি ভার্চুয়াল সভায় এ ঈদের জামাত বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। খোলা ময়দানে ঈদের জামাত বন্ধ থাকলেও মসজিদে মসজিদে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে ঈদের জামাত অনুষ্টিত হয়।

জানা যায়, প্রতি বছর শোলাকিয়ায় ঈদের জামাত অনুষ্ঠানে নেয়া হয় ব্যাপক প্রস্তুতি। বিশেষ করে ঈদুল ফিতরে দেশ-বিদেশের তিন থেকে সাড়ে তিন লাখ মুসল্লি একসঙ্গে শোলাকিয়ার বিশাল প্রান্তরে নামাজ পড়েন। এখানে একটি মাত্র জামাত অনুষ্ঠিত হয়।

জানা গেছে, বারো ভূঁইয়াদের অন্যতম প্রতাপশালী বীর ঈশা খাঁর ১৬তম বংশধর দেওয়ান মান্নান দাদ খাঁ ১৯৫০ সালে শোলাকিয়া ঈদগাহটি ওয়াকফ করেন। তারও দুশ বছর আগে থেকে শোলাকিয়া মাঠে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে বলে উল্লেখ আছে ওই ওয়াকফ দলিলে।

১৮২৮ সালে ঈদুল ফিতরের বড় জামাতে এ মাঠে প্রথম ১ লাখ ২৫ হাজার মুসল্লি একসঙ্গে ঈদের নামাজ আদায় করেন। সেই থেকে এ মাঠের নাম হয় ‘সোয়ালাখিয়া’, যা এখন শোলাকিয়া নামে পরিচিত।

শোলাকিয়া এলাকার বাসিন্দা রাহাত খান জানান, ২০১৬ সালের ভয়াবহ জঙ্গি হামলাও এ ময়দানের জামাত ঠেকাতে পারেনি। কিন্তু করোনা সংক্রমণ আতঙ্ক  গত বছরের মতো এবারও কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ময়দানের ঈদের জামাত বন্ধ করে দিল।

স্থানীয় বাসিন্দা ও জেলা কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন বাচ্চু জানান,  ছোট সময় শোলাকিয়া মাঠে থেকে লাখ লাখ মুসুল্লির সাথে নামাজ আদায় করতাম। কিন্তু গত দুই বছর ধরে করোনার কারণে শোলাকিয়া জামাত আদায় করতে পারছি না।  তবে আমরা আশা করছি আগামী বছর থেকে সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে এবং আবার শোলাকিয়ায় লাখ লাখ মুসুল্লির সাথে আদায় করতে পারব।

কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শামীম আলম জানান, করোনাভাইরাসের কারণে ও সরকারি নির্দেশনা থাকায় খোলা ময়দানে নামাজ আদায় বন্ধ হওয়ায় মসজিদে মসজিদে স্বাস্থ্যবিধি মেনে নামাজ করা হয়েছে।

করোনাভাইরাসের কারণে গত বছরের মতো এবারও হয়নি দেশের সবচেয়ে বড় ও কিশোরগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী শোলাকিয়া ঈদের জামাত। খোলা মাঠে ঈদের জামাত না হলেও মসজিদে মসজিদে ঈদের জামাত আদায় হয়েছে।

আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে ৮ টার দিকে কিশোরগঞ্জে প্রধান ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে কিশোরগঞ্জের পাগলা মসজিদে।  পাগলা মসজিদের ইমামতি করেন মসজিদের খতিব মুফতি খলিলুর রহমান।

এছাড়া কিশোরগঞ্জ শহরের ৪০ টি মসজিদে ঈদের নামাজ আদায় করা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *