তোফায়েল আহমেদ: কিশোরগঞ্জের হাওর উপজেলা অষ্টগ্রামে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর মুখে হাসি ফুটাচ্ছে জাকিরের নিজ উদ্যোগে গড়া স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন দারিদ্র বিমোচন সংস্থা। জাকির হোসাইন অষ্টগ্রাম উপজেলার বর্ধমানপাড়া গ্রামের সাধারণ একটি পরিবার থেকে বেড়ে উঠা যুবক। সে পবিত্র গ্রন্থ আল কোরআনের একজন হাফেজ, ঢাকাস্থ ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আল কোরআন ও ইসলামিক স্টাডি বিষয়ে অনার্স ক্লাসে অধ্যয়নরত ও পেশায় স্থানীয় মসজিদের ইমাম।
হাওর এলাকা অষ্টগ্রামের একটি অংশ দরিদ্র। তাদের কথা চিন্তা করেই জাকির বছর খানেক আগে গড়ে তোলে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন দারিদ্র বিমোচন সংস্থা। ইতিমধ্যে সে এসব দরিদ্র জনগোষ্ঠীর মাঝে শীতবস্ত্র, ঈদ সামগ্রী, পোশাক, ইফতার, প্রতিবন্ধীদের হুইল চেয়ারসহ বিভিন্ন নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী বিতরণ করে আসছে।
সম্প্রতি দেশব্যাপী করোনা ভাইরাস জনিত কভিড-১৯ আতঙ্কে যখন সারা দেশ ভীত সন্ত্রস্থ তখনও জাকির ঘরে বসে থাকেননি। এলাকার দরিদ্র জনগোষ্ঠীর সাথে যোগাযোগ করে দু’শ হতদরিদ্র, দিনমজুর পরিবারের মাঝে চাল, ডাল, আলু, তেল, সাবানসহ প্রয়োজনীয় সামগ্রী বিতরণ করেছে। এলাকায় জনসচেতনতামূলক মাইকিংসহ প্রায় পাঁচশত পরিবারের মাঝে বিতরণ করছে মাস্ক ও লিফলেট।
সংগঠন থেকে উপকারভোগী একাধিকজনের সাথে কথা বলে জানা যায়, জাকির এলাকার দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য তার সাধ্যমতো কাজ করে যাচ্ছে। বিপদে আপদে তাকে পাওয়া যায় সবার আগে। সে সবসময় তাদের খোঁজ খবর রাখেন বলে জানা যায়। রোজা, ঈদ বা দেশের দুর্যোগময় মুহুর্তে খাদ্য, বস্ত্র, প্রয়োজনীয় সামগ্রী দিয়ে জাকিরের সংগঠনটি পাশে থাকে সবসময়।
জাকির হোসাইনের সাথে আলাপচারিতায় জানায়, আমি নিজ উদ্যোগে আমি এবং আমার প্রায় অর্ধশতাধিক সহযোগী বন্ধুদের নিয়ে সংগঠনটি ২০১৯ সালে গড়ে তুলি। আমার আমাদের সবার পকেট খরচ ও মাসিক আয়ের একটা অংশ ফান্ড আকারে তৈরী করে সেখানে অর্থ সংগ্রহ করি।
আমরা ভাটি এলাকার মানুষ হওয়ায় অনেকাংশে আমরা পিছিয়ে ছিলাম। পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীদের কথা মাথায় রেখে আমি কাজ করে যাচ্ছি। এ পর্যন্ত আমার সংগঠন থেকে যা করেছি তা সম্পূর্ণ ব্যক্তি উদ্যোগে। এর মাঝে কেউ কেউ যারা বিত্তবান আছেন তারাও আমাকে মাঝে মাঝে সাহায্য করেছে বা করেন। তবে তা খুবই সমান্য।
এলাকার বিত্তশালীরা এসব কাজে পিছিয়ে কেন? এমন প্রশ্নে জাকির জানায়, এলাকায় অনেক বিত্তশালী আছেন যারা ইচ্ছে করলেই আমার মতো করে নিজ নিজ এলাকার দরিদ্র জনগোষ্ঠী নিয়ে কাজ করে যেতে পারেন। সবাই নিজ জায়গা থেকে কাজ করলে একদিন এ দেশে দরিদ্র থাকবে না বলে আমি বিশ্বাস করি।
এই সংগঠনের সাথে জড়িত তারা সবাই সংগঠনের সাধারণ কর্মী। কোনো পদ পদবী বা অর্থমোহ ছাড়াই তারা দেশের ক্রান্তিকালে মানুষের পাশে কাজ করে যাচ্ছে। আমাদের এসব কার্যক্রম অব্যহত থাকবে। আমার এই সংগঠনকে বাংলাদেশ সরকার যদি সহযোগিতা করেন তাহলে সংগঠনের কার্যক্রম দেশব্যাপী ছড়িয়ে দেয়ার লক্ষ্য রয়েছে।