সর্বশেষ
প্রচ্ছদ / হাওরাঞ্চল / কিশোরগঞ্জ / ১০৩ দিনে মসজিদের দানবাক্সে ১ কোটি ৫০ লাখ টাকা

১০৩ দিনে মসজিদের দানবাক্সে ১ কোটি ৫০ লাখ টাকা

নিজস্ব সংবাদদাতা : কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের দানবাক্স থেকে এবার রেকর্ড পরিমাণ অর্থাৎ ১ কোটি ৫০ লাখ ৮৪ হাজার ৫৯৮ টাকা পাওয়া গেছে।

শনিবার বিকেলে গণনা শেষে এ টাকার হিসাব পাওয়া যায়। টাকা ছাড়াও দান হিসেবে অনেক স্বর্ণালঙ্কার পাওয়া গেছে দানবাক্সে। প্রায় সাড়ে তিন মাস পর এ পরিমাণ টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার পাওয়া যায়।

পাগলা মসজিদের দানবাক্স থেকে এ পর্যন্ত এটিই সর্বাধিক পরিমাণ টাকা পাওয়ার রেকর্ড। এর আগে পাগলা মসজিদের দানবাক্স থেকে সর্বোচ্চ ১ কোটি ২৭ লাখ ৩৬ হাজার ৪৭১ টাকা পাওয়া গিয়েছিল।

স্থানীয় সূত্র জানায়, শনিবার সকাল ৯টার দিকে জেলা প্রশাসনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের আটটি দানবাক্স খোলা হয়। পরে দানবাক্সের টাকাগুলো বস্তায় ভরা হয়। এরপর মসজিদের দোতলার মেঝেতে রেখে শুরু হয় গণনার কাজ। টাকা গণনায় মসজিদ-মাদরাসার ৬০ জন ছাত্র-শিক্ষক ছাড়াও রূপালী ব্যাংকের কর্মকর্তারা অংশ নেন। এবার তিন মাস ১৩ দিন পর মসজিদের দানবাক্সগুলো খোলা হয়।

টাকা গণনার কাজ তদারকি করেছেন কিশোরগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফা, নেজারত ডেপুটি কালেক্টর (এনডিসি) মীর মো. আল কামাহ তমাল, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাহমুদুল হাসান, উবাইদুর রহমান সাহেল, পাগলা মসজিদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. শওকত উদ্দীন ভূঞা ও রূপালী ব্যংকের এজিএম অনুফ কুমার ভদ্র প্রমুখ।

টাকা গণনা শেষে কিশোরগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফা বলেন, ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের দানবাক্স থেকে এবার রেকর্ড পরিমাণ টাকা পাওয়া গেছে। এবার দানবাক্সে ১ কোটি ৫০ লাখ ৮৪ হাজার ৫৯৮ টাকা পাওয়া গেছে। টাকা পুলিশ পাহারায় স্থানীয় রূপালী ব্যাংকের মসজিদের হিসাবে জমা রাখা হয়েছে।

গত ১৩ জুলাই পাগলা মসজিদের দানবাক্স থেকে ১ কোটি ১৪ লাখ ৭৪ হাজার ৪৫০ টাকা পাওয়া যায়। ওই সময় বৈদেশিক মুদ্রাসহ বেশকিছু স্বর্ণালঙ্কার পাওয়া গেছে। এর আগে গত ১৩ এপ্রিল দানবাক্স খোলার পর ১ কোটি ৮ লাখ ৯ হাজার ২০০ টাকা পাওয়া যায়।

জানা যায়, কিশোরগঞ্জ শহরের হারুয়া এলাকায় নরসুন্দা নদীর তীরে ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের অবস্থান। এখানে ইবাদত বন্দেগি করলে বেশি সওয়াব পাওয়া যায় বলে মানুষের বিশ্বাস। রোগ-শোক বা বিপদে মসজিদে মানত করলে মনের বাসনা পূর্ণ হয়। এসব বিশ্বাস থেকে এখানে প্রতিনিয়ত দান খয়রাত করে মানুষ। তিন মাস পর পর খোলা হয় মসজিদের দানবাক্স। প্রতিবারই টাকার পরিমাণ ছাড়িয়ে যায় কোটি টাকা। নানা শ্রেণিপেশা আর ধর্মের লোকজন এখানে আসেন মানত আদায় করতে।

দানবাক্স ছাড়াও প্রতিদিন নানা শ্রেণিপেশা আর ধর্মের মানুষ মানত আদায় করতে ছুটে আসেন পাগলা মসজিদে। নগদ টাকা ছাড়াও তারা নিয়ে আসেন চাল-ডাল-গবাদি পশুসহ বিভিন্ন সামগ্রী। দিন শেষে এসব পণ্য নিলামে বিক্রি করে ব্যাংকে টাকা জমা রাখা হয়।

দানকৃত টাকায় পাগলা মসজিদ ও ইসলামী কমপ্লেক্সের খরচ চালিয়ে অবশিষ্ট টাকা জমা রাখা হয় ব্যাংকে। দানের টাকা থেকে জেলার বিভিন্ন মসজিদ, মাদরাসা ও এতিমখানায় অনুদান দেয়া হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *