হাওর বাংলা ডেস্ক : দুর্বৃত্তদের দেয়া আগুনে পুড়ে মারা যাওয়া মাদরাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফির হত্যাকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, রাফি হত্যার সঙ্গে যারা জড়িত আছে তাদেরকে ছাড় দেয়া হবে না। তাদের বিচার হবেই।
আজ শুক্রবার বিকেলে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সভার শুরুতে সূচনা বক্তব্যে শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন। বৈঠকে উপদেষ্টা পরিষদের অধিকাংশ সদস্য উপস্থিত ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘নুসরাত জাহান রাফির গায়ে আগুন দিয়ে হত্যা করে তারা (জড়িতরা) জঘন্য কাজ করেছে। এ ধরনের জঘন্য হত্যাকাণ্ডের নিন্দা জানানোর ভাষা আমার নেই।’
তিনি বলেন, ‘অপরাধীদের কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। শাস্তি তাদের পেতে হবে। এ ঘটনার সঙ্গে আরও যারা জড়িত আছে তাদের খুঁজে বের করা হবে। তারা কেউ রেহাই পাবে না।’
বিএনপির সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করার পথ দেখিয়েছে বিএনপি। তারা ইতিপূর্বে গাড়িতে পেট্রলবোমা ছুড়ে জীবন্ত মানুষকে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মেরেছে। যারা এর শিকার হয়েছেন তারাই একমাত্র বুঝতে পারেন এর কত যন্ত্রণা। অনেকে পোড়া শরীর নিয়ে এখনো বেঁচে আছেন। তাদের অনেককেই আমরা সাহায্য সহযোগিতা করছি।’
নুসরাত জাহান রাফি সোনাগাজীর ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসার আলিমের পরীক্ষার্থী ছিলেন। ওই মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলার বিরুদ্ধে এর আগেও ওই ছাত্রীকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ ওঠে। নুসরাতের মা শিরিন আক্তার বাদী হয়ে গত ২৭ মার্চ সোনাগাজী থানায় মামলা করেন।
এরপর অধ্যক্ষকে গ্রেফতার করে পুলিশ। মামলা তুলে নিতে বিভিন্নভাবে নুসরাতের পরিবারকে হুমকি দেয়া হচ্ছিল। এর মধ্যে ৬ এপ্রিল (শনিবার) সকাল ৯টার দিকে আলিম পর্যায়ের আরবি প্রথমপত্র পরীক্ষা দিতে সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসা কেন্দ্রে যান নুসরাত। এ সময় তাকে কৌশলে একটি বহুতল ভবনে ডেকে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। সেখানে তার গায়ে আগুন লাগিয়ে দেয়া হয়।
ঘটনার চারদিন পর বুধবার (১০ এপ্রিল) রাত সাড়ে ৯টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (ঢামেক) বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান নুসরাত। বৃহস্পতিবার গ্রামের বাড়িতে তার দাফন সম্পন্ন হয়।