হাওর বাংলা ডেস্ক : মদ্যপান করে মাতলামির অভিযোগে রাজশাহী জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এএসপি) সুমিত কুমার চৌধুরীকে পিটিয়ে পুলিশে সোপর্দ করেছে এলাকাবাসী। সম্প্রতি রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের সামনে চাঞ্চল্যকর এ ঘটনা ঘটে।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে নগরীর রাজপাড়া থানা পুলিশ তাকে হেফাজতে নেয়। পরে কঠোর গোপনীয়তার মধ্যে সুমিত চৌধুরীকে থানা থেকে নিয়ে যান জেলা পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তা। পরদিন জেলা পুলিশ থেকে তাকে স্ট্যান্ড রিলিজ করা হয়। সুমিত চৌধুরী জেলা পুলিশের বিশেষ শাখার এএসপি হিসেবে কর্মরত ছিলেন। গত ২৮ মে তাকে নৌ পুলিশে বদলি করা হয়।
তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সদ্য বিদায়ী এএসপি সুমিত চৌধুরী। তার ভাষ্য, তিনি এমন কিছু কাজ করেননি যাতে পুলিশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়। তাকে সরাতেই এসব অপপ্রচার করা হয়েছে। তবে থানা হেফাজেতে নেয়ার কারণ জানতে চাইলে কৌশলে এড়িয়ে যান তিনি।
পুলিশের সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, এএসপি সুমিত চৌধুরীর বিরুদ্ধে নিজ দপ্তরে বসেই নিয়মিত মাদক সেবনের অভিযোগ রয়েছে। মাদক ব্যবসায়ীদের সঙ্গেও তার নিবিড় যোগাযোগ। মাদক সম্পৃক্ততা ছাড়াও তার বিরুদ্ধে আরও কয়েকটি গুরুতর অভিযোগ রয়েছে।
এসব অভিযোগের প্রেক্ষিতে তাকে নৌ পুলিশে বদলি করা হয়। বদলির এই আদেশ হাতে পাওয়ার পর আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠেন সুমিত চৌধুরী। এর মধ্যে এসপির সঙ্গেও খারাপ আচরণ করেন তিনি।
এদিকে নগরীর রাজপাড়া থানা পুলিশের নির্ভরযোগ্য একটি সূত্র জানিয়েছে, শুক্রবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে সুমিত চৌধুরী মদ্যপান করে রামেক হাসপাতালের সামনে মাতলামি করছিলেন। ওই সময় কয়েকজন পথচারী ও দোকানির সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন তিনি। এরপর তারা ওই পুলিশ কর্মকর্তাকে গণপিটুনি দেন। সাদা পোশাকে থাকায় তারা ওই পুলিশ কর্মকর্তাকে চিনতে পারেননি।
খবর পেয়ে দ্রুত সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছান রাজপাড়া থানার ডিউটি অফিসার ব্রজ গোপাল। জনরোষ থেকে তারাই উদ্ধার করে সুমিত চৌধুরীকে থানায় নেন।
খবর পেয়ে পরে জেলা পুলিশের কর্মকর্তারা রাজপাড়া থানায় ছুটে যান। দীর্ঘ গোপন দেনদরবার শেষে ভোররাতে সুমিত চৌধুরীকে সঙ্গে নিয়ে থানা থেকে বেরিয়ে যান পুলিশ কর্মকর্তারা।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন রাজপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মশিউর রহমান। তিনি জানান, ওই রাতে এক পুলিশ কর্মকর্তাকে নিয়ে ঝামেলা হয়েছিলো। পুলিশ গিয়ে তাকে উদ্ধার করে। বিষয়টি নিষ্পত্তি শেষে ভোরের দিকে থানা থেকে ছাড়া পান ওই পুলিশ কর্মকর্তা।
সুত্র: নিউজটোয়েন্টিফোর টিভি