নিজস্ব সংবাদদাতা : কিশোরগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ আলীকে বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে।
মহাপরিচালকের অনুমোদন ক্রমে পানি উন্নয়ন বোর্ড রোববার এ সংক্রান্ত এক আদেশ জারি করে নিজস্ব ওয়েবসাইটে প্রচার করে।
এর আগে তার বিরুদ্ধে জরিপ কাজ ও অনুন্নয়ন রাজস্বখাতসহ সহ বিভিন্ন কাজে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ উঠে।
জানা গেছে, ২০১৯-২০ অর্থবছরে কিশোরগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের আওতাধীন তাড়াইল উপজেলায় সাইদুল্লিবন্নী ধলাই নদী খননে জরিপ কাজের জন্য একই সঙ্গে হুবহু দু’টি টেন্ডার (কিশ-এসডব্লিউ-৩৩/২০১৯-২০ এবং কিশ-এসডব্লিউ-৩৪/২০১৯-২০) করা হয়।
একইভাবে কোবাদিয়া খাল, সুতিয়ার খাল, ফুলেশ্বরী খাল, ধলা চায়না খাল, বেলংকা খাল, শিমুকহাটি খাল ও বৈরাগীর খাল খননে জরিপ কাজের জন্য একই সঙ্গে হুবহু দু’টি টেন্ডার (কিশ-এসডব্লিউ-৩৫/২০১৯-২০ এবং কিশ-এসডব্লিউ-৩৬/২০১৯-২০) করা হয়।
এরমধ্যে সাইদুল্লিবন্নী ধলাই নদী খননে জরিপ কাজের জন্য প্রতিটি টেন্ডারে এক লাখ ৯৮ হাজার টাকা করে দু’টি টেন্ডারে তিন লাখ ৯৬ হাজার টাকা এবং কোবাদিয়া খাল, সুতিয়ার খাল, ফুলেশ্বরী খাল, ধলা চায়না খাল, বেলংকা খাল, শিমুকহাটি খাল ও বৈরাগীর খাল খননে জরিপ কাজের জন্য প্রতিটি টেন্ডারে এক লাখ ৮৬ হাজার টাকা করে দু’টি টেন্ডারে তিন লাখ ৭২ হাজার টাকা বরাদ্দ ধরা হয়।
মাঠ পর্যায়ে দু’টির জরিপ কাজই সম্পন্ন করে সার্ভে টেকনোলজি অব বাংলাদেশ (এসটিবিএল)। বিধি অনুযায়ী এসটিবিএলকে কাজের বিল প্রদান করা হলেও নয়-ছয়ের জন্য করা ডুপ্লিকেট দু’টি টেন্ডারের বিল নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ আলীর পছন্দের এক ঠিকাদারের নামে করা হয়।
এই দু’টি ডুপ্লিকেট টেন্ডারের বিলে কাজ দু’টির দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তা করিমগঞ্জ পওর শাখার উপসহকারী প্রকৌশলী মোহাম্মদ পাভেল স্বাক্ষর করতে অস্বীকৃতি জানালে নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ আলী তার পছন্দের কর্মকর্তা ভৈরব পানি উন্নয়ন শাখা (২) এর উপসহকারী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান রাজিবের স্বাক্ষরে বিল উত্তোলন করান।
আত্মসাতের উদ্দেশ্যে ডুপ্লিকেট টেন্ডার করে নির্বাহী প্রকৌশলী দু’টি কাজ থেকে কোনো ধরনের কাজ করা ছাড়াই মোট তিন লাখ ৮৪ হাজার টাকা ভুয়া বিল উত্তোলন করেছেন।
এমনকি নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ আলী ২০১৯-২০ অর্থ বছরে অনুন্নয়ন রাজস্ব খাতের (এনডিআর) ৩৭টি কাজের বিপরীতে প্রতিটিতে দুই লাখ টাকার কাছাকাছি বরাদ্দ রেখে মোট ৬৮ লাখ ১৮ হাজার টাকা নয়-ছয় করেছেন বলেও অভিযোগ উঠে।
আর এ সব অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ উর্ধতন বিভাগীয় কর্মকর্তাদের তদন্ত প্রতিবেদনে প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়।
এমন পরিস্থিতিতে মহাপরিচালকের অনুমোদনক্রমে কিশোরগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ আলীকে চাকরি থেকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করে পানি উন্নয়ন বোর্ড।