নিজস্ব সংবাদদাতা : প্রায় আট মাস পরে নিজ এলাকায় গিয়ে কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া ছোট ভাই মো. আবদুল হাইয়ের জানাজায় অংশ নিলেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।
রোববার দুপুরে আবদুল হাইয়ের প্রথম জানাজা কিশোরগঞ্জের মিঠামইনের বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হক সরকারি কলেজ প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হয়। জানাজায় স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা-কর্মী, বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ অংশগ্রহণ করেন।
জানাজার আগে মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হাইয়ের কফিনে স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে রাষ্ট্রীয় সম্মান (গার্ড অব অনার) জানানো হয়। দুপুরে হেলিকপ্টার যোগে ঢাকা থেকে আবদুল হাইয়ের মরদেহ মিঠামইনে নিয়ে যাওয়া হয়। কলেজ প্রাঙ্গণে জানাজার আগে সেখানে আবদুল হাইয়ের জীবন ও কাজ নিয়ে বক্তব্য রাখেন তার ভাতিজা স্থানীয় সংসদ সদস্য রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিক। এছাড়া স্থানীয় রাজনৈতিক নেতারা বক্তব্য রাখেন। কফিনে বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের পক্ষ থেকে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়।
রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব মো. জয়নাল আবেদীন জানান, আছরের নামাজের পর রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ তার বসতবাড়ি প্রাঙ্গণে ছোট ভাই আবদুল হাইয়ের দ্বিতীয় জানাজায় অংশ নেন। সেখানে রাষ্ট্রপতির পরিবারের অন্যান্য সদস্যরাও জানাজায় অংশ নেন। ওই জানাজায় ইমামতি করেন রাষ্ট্রপতির ছোট ছেলে রিয়াদ আহমেদ। জানাজা শেষে পিপিই পরিহিত আবদুল হামিদ তার ছোট ভাই ও সহকারী একান্ত সচিব আবদুল হাইয়ের কফিনে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। জানাজা শেষে আবদুল হাইকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। পরে আব্দুল হাইয়ের রুহের মাগফেরাত কামনা করে দোয়া ও মোনাজাতে অংশ নেন রাষ্ট্রপতি।
দুপুরে রাষ্ট্রপতি হেলিকপ্টারে করে মিঠামইন পৌঁছান। সর্বশেষ গত বছরের অক্টোবর মাসে কিশোরগঞ্জ সফরে গিয়েছিলেন রাষ্ট্রপতি। সেই সময় সাতদিন তিনি বিভিন্ন এলাকা ঘুরে ঘুরে নানা কর্মসূচিতে যোগ দেন, কয়েকটি প্রকল্পের উদ্বোধন করেন। ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) শুক্রবার (১৭ জুলাই) মারা যান আবদুল হাই। তার বয়স হয়েছিল ৬৭ বছর।
করোনাভাইরাস সংক্রমণের উপসর্গ দেখা দিলে গত ২ জুলাই তার নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এতে পজিটিভ রিপোর্ট আসলে রাতেই তাকে ঢাকা সিএমএইচে ভর্তি করা হয়। আবদুল হাই কিশোরগঞ্জের মিঠামইন উপজেলায় ১৯৫৩ সালে জন্মগ্রহণ করেন । ৯ ভাই বোনের মধ্যে আবদুল হাই ছিলেন অষ্টম। মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হাই কিশোরগঞ্জের মিঠামইন উপজেলার বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হক সরকারি কলেজের সাবেক সহকারী অধ্যাপক হিসেবেও কাজ করেছেন। হাজি তায়েব উদ্দিন স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য এবং শিক্ষক ছিলেন তিনি।