হাওর বাংলা ডেস্ক: এলাকার উন্নয়ন কর্মকাণ্ড তদারকি করতে সংসদ সদস্যদের (এমপি) নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সংসদ সদস্যদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘নিজ নিজ এলাকায় যেসব উন্নয়ন কর্মকাণ্ড চলছে, তার দিকে নজর দেওয়া দরকার। কাজগুলো সঠিকভাবে হচ্ছে কি না, সেটা ভালোভাবে দেখবেন। তাহলে দেখবেন, কাজগুলো সুচারু ও সুষ্ঠুভাবে হচ্ছে; উন্নয়ন ত্বরান্বিত হচ্ছে। ভোটারদের মঙ্গল করা আপনাদের দায়িত্ব। সবাই দায়িত্ব পালন করবেন সেই প্রত্যাশা করি।’
বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) জাতীয় সংসদের চতুর্থ অধিবেশনের সমাপনী বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
বিএনপি-জামায়াতের সমালোচনা করে সরকারপ্রধান বলেন, ‘আমাদের চলার পথ খুব মসৃণ তো ছিল না। অগ্নি-সন্ত্রাস, মানুষ খুন করা, পুড়িয়ে মারা, বিআরটিসির বাস পোড়ানো, রেল পুড়িয়ে দেওয়া। মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়েছে। এখন যারা বিরোধী দলে (জাতীয় পার্টি) আছে, তারা যেমন বিএনপি-জামায়াত দ্বারা নির্যাতিত ও নিগৃত হয়েছেন। আমরা যারা সরকারে আছি, আমরাও তাদের দ্বারা নির্যাতিত হয়েছি। সেই তুলনায় আমরা তো তাদের কিছুই করছি না। আমরা দেশ গড়ায় ব্যস্ত। দেশের মানুষের কল্যাণ করার জন্য আমরা সময় দিই। সেটা আমরা করছি।’
বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি নিয়ে সমালোচকদের সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিদ্যুতের যখন চরম দুরবস্থা, তখন আমরা স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা নিয়ে উৎপাদন বাড়াই। এক কিলোওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনে আমাদের যেখানে ২৬ টাকা খরচ হয়, সেখানে আমরা নিয়েছি ৩-৪ টাকা। তা দামটি বাড়লো কোথায়? প্রাকৃতিক গ্যাস দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদনেও ৬ থেকে সাড়ে ৬ টাকা লাগে। বিদ্যুৎ উৎপাদন বেশি টাকায় করে ভর্তুকি দিয়ে কম টাকায় দেওয়ার পরও যদি কেউ বলেন, দাম কেন বাড়ানো হলো? তাহলে বিদ্যুতের দরকার নেই, উৎপাদন করবো না; বন্ধ করে দিই সব? এত কিছুর পরও যদি কথা উঠে, তাহলে বিদ্যুৎ ব্যবহার করার দরকার নেই। আর তা না হলে যে দাম উৎপাদনে খরচ হবে, সেই দামে কিনতে হবে। লাভ করতে চাই না। কিন্তু অন্তত খরচের টাকাটা পেতে হবে। সেই খরচের টাকাটাও তো আমরা নিচ্ছি না। যখন বিদ্যুৎ ছিল না, তখন জেনারেটর চালাতে অনেক খরচ করতে হতো। তাহলে দামটা দিতে আপত্তি কেন? দাম বাড়ানো হলে আন্দোলন কেন? গ্যাসের সমস্যার কারণে এলএনজি আমদানি করেছি। এর দাম পড়ে ৬০ টাকা; সেখানে আমরা ভর্তুকি দিচ্ছি। সব কর ফ্রি করে দিচ্ছি।’
তিনি বলেন, ‘আমরা মানুষের সার্বিক উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছি। বাংলাদেশের উন্নয়ন সারাবিশ্ব দেখছে। আমরা যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছি—সেই উন্নয়নের ধারাটা যদি অব্যাহত রাখতে পারি, তাহলে উন্নত সমৃদ্ধ সোনার বাংলা গড়ে তুলতে সক্ষম হবো।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের যখন উন্নতি হয়, অনেকেই এটা পছন্দ করতে পারে না। যারা জাতির পিতাকে হত্যা করেছে, যারা বাংলাদেশকে এটা ফেইল স্টেট করতে চেয়েছিল, তারা চক্রান্ত করেই যাচ্ছে।’
বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, ‘উন্নয়নের গতিধারা অব্যাহত থাকবে। দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবো। গণতান্ত্রিক পরিবেশ আছে। বর্তমান বিরোধী দল সংসদে গঠনমূলক পদক্ষেপ নেন। রাজনৈতিকভাবে আমরা গণতন্ত্রের চর্চাটা সবার জন্য শুরু করে দিয়েছি। সঙ্গে সঙ্গে অর্থনৈতিক উন্নয়েন কাজ করে যাচ্ছি। এখন বাজেট করার জন্য কারও কাছে ভিক্ষা চাইতে হয় না। নিজেদের অর্থে নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে বাজেট দিতে পারি।’