টিটু দাস : রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ জনগণের উদ্দেশ্যে বলেন, যারা টিআর-কাবিখা বিক্রি করে দেয় তাদের ভোট দেবেন না। যারা সৎ, যাদের দিয়ে এলাকা ও দেশের সার্বিক উন্নয়ন হয় তাদের ভোট দেবেন।’ একইসঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘ভালো সৎ ও দেশের প্রতি নিবেদিত নেতাদের মনোনয়ন দিলে দেশের উন্নতি হবে।’
আজ সোমবার (০৮ আক্টোবর) বিকেলে কিশোরগঞ্জের গুরুদয়াল কলেজ মাঠে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ দ্বিতীয়বারের মতো রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হওয়ায় গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
রাষ্ট্রপতি আরও বলেন, ‘এই গুরুদয়াল কলেজ থেকেই আমি ছাত্র রাজনীতি শুরু করেছি। আমি আপনাদের জন্যই রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আসনে বসতে পেরেছি। আপনাদের কাছে আমি চির কৃতজ্ঞ।’ এসময় রাষ্ট্রপতি সর্বসাধারণের উদ্দেশে আরও বলেন, ‘রিকশাওয়ালা থেকে শুরু করে জুতা পালিশকারীদের কাছ থেকে পর্যন্ত চাঁদা তুলে রাজনীতি করেছি। এমনকি তারা আমাকে সম্মান দিয়ে আমার ডাকে হরতাল অবরোধে সায় দিয়েছেন। সবাই আমাকে ভালোবেসেই আমার সঙ্গে যোগ দিতেন।’
জনপ্রশাসন মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের প্রসঙ্গ টেনে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘প্রথমবার রাষ্ট্রপতি হওয়ার পর কিশোরগঞ্জে আমাকে যে গণসংবর্ধনা দেওয়া হয়েছিল, সেখানে আমার ভাই আশরাফও উপস্থিত ছিলেন। কিন্তু দুঃখের বিষয় আজ আশরাফ অসুস্থতার কারণে দেশের বাইরে। আমি দোয়া করি এবং আপনারও আশরাফের জন্য দোয়া করবেন। আমি চাই তিনি দ্রুত সুস্থ হয়ে আবার সক্রিয়ভাবে রাজনীতিতে ফিরে আসুন।’
কিশোরগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহ আজিজুল হকের পরিচালনা ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. জিল্লুর রহমানের সভাপতিত্বে আয়োজিত গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন- কিশোরগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য ও রাষ্ট্রপতির ছেলে রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিক, কিশোরগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য মো. আফজাল হোসেন, কিশোরগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য মো. সোহরাব উদ্দিন, সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য দিলারা বেগম আসমা, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কামরুল আহসান শাহজাহান, সাধারণ সম্পাদক এম এ আফজল ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশফাকুল ইসলাম টিটু, কিশোরগঞ্জের মেয়র মাহমুদ পারভেজ ও রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক রাসেল আহমেদ তুহিনসহ প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে বক্তারা কিশোরগঞ্জে একটি পুর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন, রেল ব্যবস্থার উন্নতিসহ বেশকিছু দাবি-দাওয়া তুলে ধরেন। এসব বক্তব্যের জবাবে রাষ্ট্রপতি কিশোরগঞ্জের একটি পুণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের ঘোষণা দেন। একই সঙ্গে দ্রুত আরেকটি আন্তনগর রেলগাড়ি কিশোরগঞ্জে যুক্ত করার ঘোষণাসহ রেলব্যবস্থার উন্নয়নে ব্যবস্থা নেবেন বলে জানান।
অনুষ্ঠানে বিভিন্ন উপজেলা থেকে হাজার হাজার মানুষ মিছিল নিয়ে রাষ্ট্রপতির গণসংবর্ধনায় যোগ দেন। পরে সন্ধ্যায় রাষ্ট্রপতি সার্কিট হাউজে কিশোরগঞ্জ জেলা বার, প্রেসক্লাব, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, রাজনৈতিক নেতারা, চেম্বার, সরকারি কর্মকর্তাসহ পেশাজীবী সংগঠনের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ ও মতবিনিময় করেন। আগামীকাল মঙ্গলবারও তিনি এক সংবর্ধনাসহ বিভিন্ন কর্মসূচিতে যোগ দেবেন।