রাজীবুল হাসান, নরসিংদী ঘুরে এসে :
নরসিংদির বেলাব উপজেলায় এবার লটকনের বাম্পার ফলন হয়েছে। লটকনের বাজার দরও এবার বেশ ভাল। এলাকার শত শত কৃষক লটকন চাষাবাদ করে এখন স্বাবলম্বী। জমিতে লটকন চাষে খরচ খুব কম কিন্ত মুনাফা অনেক বেশী। লটকন চাষ করে যে মুনাফা পাওয়া যায় অন্য ফসল চাষে তার অর্ধেক মুনাফাও আসেনা। একারনে বেলাব উপজেলা এলাকায় দিন দিন লটকন চাষ বাড়ছে। কৃষকদের কাছে লটকন এখন অর্থকরি ফসল হিসেবে পরিচিত হয়ে গেছে। লটকন চাষের জন্য এই এলাকার মাটি খুবই উপযোগী। এই এলাকার উৎপাদিত লটকন দেশের রাজধানী ঢাকা, চট্রগ্রাম, সিলেটসহ বিভিন্ন জেলায় রপ্তানী হচ্ছে। এমনকি পৃথিবীর ১০/১২ টি দেশে এই লটকন রপ্তানী হচ্ছে বলে জানায় ক্রেতারা। লটকন চাষকে কেন্দ্র করে এলাকায় হাজার লোকের কর্মসংস্হান সৃষ্টি হয়েছে বলে জানান কৃষকরা। উৎপাদিত লটকন কেনাবেচা করতে এলাকার মরজাল বাজারে প্রতিদিন সকালে হাট বসে। দেশের বিভিন্ন স্হান থেকে পাইকাররা এখানে এসে লটকন নিয়ে যাচ্ছে। প্রতিদিন হাটে ১০/১৫ লাখ টাকার লটকন কেনাবেচা হচ্ছে বলে জানান বিক্রেতারা।
জানা গেছে কয়েক যুগ আগে নরসিংদির বেলাব উপজেলায় লটকন চাষ শুরু হয়। তখন শুরুতে এতটা পরিমান চাষ ছিলনা। পরে কৃষকরা লটকন চাষাবাদে লাভমান হলে দিন দিন চাষ বেড়ে যায়। এবার এই উপজেলায় ১ শ ২৩ হেক্টর জমিতে লটকন চাষ হয়েছে। প্রতি বিঘা জমিতে ৩০ টি চারা রোপন করলে গাছে ফলন আসলে প্রায় ৬০/৭০ মন লটকন উৎপাদন হয় বলে জানায় কৃষকরা। এতে প্রতিমন ২ হাজার টাকা দরে প্রায় দেড় লাখ টাকা বিক্রি হয়। বেলাব এলাকাটি লাল দোআশলা মাটি বলে লটকন চাষে খুবই উপযোগী। মুখরোচক ফল লটকন এবং খেতে খুবই সুস্বাধূ। ডাক্তারগন জানান, লটকনে ভিটামিন বি-১, বি-২ ও ভিটামিন সি আছে প্রচুর। এছাড়া ফসফরাস, ক্যালসিয়াম, ক্রোমিয়াম, ম্যাগনিসিয়াম, ও পটাশিয়াম রয়েছে। সুস্বাধু ফল হিসেবে লটকন এদেশের মানুষের কাছে খুবই জনপ্রিয়।
বেলাব উপজেলা কৃষি অফিসার জানান, এবার এই উপজেলায় ১ শ ২৩ হেক্টর জমিতে লটকন চাষ হয়েছে। প্রতি হেক্টর জমিতে ৬/৭ শ লটকন চারা রোপন করা যায়। লটকন চাষে খরচ কম লাভ বেশী। প্রতি বিঘা জমিতে সার কীটনাশকসহ ১০ হাজার টাকা প্রতি বছর ব্যয় হয় কিন্ত আয় হয় লাখ টাকার মত। তিনি বলেন এই এলাকার লটকন দেশের বড় বড় শহর ছাড়াও এখন বিদেশে রপ্তানী হচ্ছে বলে জানান তিনি। লটকন চাষ করে এলাকার কৃষকরা এখন স্বাবলম্বি হয়েছে। এবার বেলাব এলাকায় লটকনের বাম্পার ফলন হয়েছে বলে জানান কৃষি কর্মকর্তা।