নিউজ ডেস্ক: বিএনপির চলমান শান্তিপূর্ণ আন্দোলন আরও বেগবান করে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলার নির্দেশ দিয়েছেন দলটির কারাবন্দি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। কিন্তু আন্দোলন নিয়ে খালেদা জিয়ার হঠাৎ সিদ্ধান্তে দলের নেতাদের মধ্যে তৈরি হয়েছে টানাপোড়েন। তারা বলছেন, বিএনপির সিনিয়র নেতাদের অধিকাংশই এখনই বড় আন্দোলনে যাবার ঝুঁকি নিতে চান না। এক্ষেত্রে তাদের আপত্তির প্রধান কারণ হলো গ্রেপ্তার, হয়রানি। তারা মনে করছেন, এরকম কর্মসূচি গ্রহণ করা হলে সরকার নতুন করে গ্রেফতার শুরু করবে, তখন আন্দোলনকে এগিয়ে নেওয়া অসম্ভব হয়ে পরবে।
প্রসঙ্গত, ২০ জুন বিকালে রাজধানীর পুরান ঢাকার নাজিম উদ্দিন রোডের পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করেন দলটির ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ আজম খান। তিনি খালেদা জিয়ার সঙ্গে প্রায় একঘণ্টা কথা বলেন। আহমেদ আজম খানের মাধ্যমেই দলের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতাদের আন্দোলনের নির্দেশ দিয়েছেন। পরে আহমেদ আজম খান গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে বৈঠকে শীর্ষ নেতাদের অনেকেই দ্বি-মত পোষণ করেন বলে জানা যায়।
এ প্রসঙ্গে বৈঠকে উপস্থিত থাকা বিএনপির শীর্ষস্থানীয় একজন নেতা বলেন, হঠাৎ করে দলের পরিস্থিতি না বুঝে আন্দোলনের সিদ্ধান্ত নেয়া যায় না। যেখানে গ্রেফতার আতঙ্কের ফলে দলের সাধারণ কর্মসূচিতে নেতাকর্মীরা অংশ্রগহণ করতে পারছেন না, সেখানে কঠোর আন্দোলনে যাওয়া কিভাবে সম্ভব?
এদিকে আন্দোলনের প্রধান হাতিয়ার হিসেবে যে তৃণমূলকে প্রয়োজন তা এখন বিএনপির বড় দুর্বলতা। কেননা, বহুদিন ধরে আন্দোলন-কর্মসূচিতে অংশ না নেয়ায় তৃণমূল এখন প্রায় বিচ্ছিন্ন। ফলে তাদের ঐক্যবদ্ধ করে আন্দোলনের জন্য মাঠে নামাতেও অন্তত ৬/৭ মাস সময় লাগবে বলে মনে করছেন নেতারা। কিন্তু নির্বাচনের সময় ঘনিয়ে আসায় সেটিও সম্ভব হচ্ছে না। নির্বাচনের আগে আন্দোলনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত মানে জনসমর্থন একেবারে ধ্বসে যাওয়া।
এ প্রসঙ্গে একজন রাজনৈতিক বিশ্লেষক বলেন, বিএনপি বিগত সময়ে ধরাশায়ী অবস্থায় ছিলো। কিন্তু আন্দোলনে অনেক সুযোগই তাদের হাতে ছিলো। এতদিন হেলায় সময় পার করে নির্বাচনের আগে বেগম খালেদা জিয়ার এমন সিদ্ধান্ত আত্মঘাতী বলেই মনে হয়। কেননা, এ অবস্থায় আন্দোলনের জন্য প্রস্তুতি নিতে এবং তৃণমূলকে একত্রিত করে রাজপথে আনতে যতটা সময় লাগবে ততটা সময় বিএনপির হাতে নেই। নির্বাচনের আগে আন্দোলন বিএনপির জনসমর্থনে ভয়াবহ অবস্থার মুখোমুখি করতে পারে। যা তাদের জন্য মোটেই সুখকর হবে না।