ডেস্ক নিউজঃ বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত হয় বলে শুক্রবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
প্রশ্নফাঁস ও জালিয়াতি ঠেকাতে নানামুখী চেষ্টার অংশ হিসেবে সরকার প্রাথমিক থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে এমসিকিউ বা বহুনির্বাচনী প্রশ্ন কমিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর এই প্রথম কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফ থেকে একই ধরনের সিদ্ধান্ত এল।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষার মান আরও উন্নত করতে সব ধরনের পরীক্ষা থেকে এমসিকিউ পদ্ধতি উঠিয়ে দেওয়া হবে। যা আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকে কার্যকর হবে।”
বর্তমানে দেশে উচ্চ শিক্ষার অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানেই এমসিকিউ প্রশ্নে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া হয়।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিতে গতবছর ৭৫টি বহুনির্বাচনী প্রশ্নের উত্তর দিতে হয়েছে শিক্ষার্থীদের। এছাড়া এসএসসির ফলাফলের ভিত্তিতে ১২ এবং এইচএসসি থেকে ১৬ স্কোরের ভেতরে তার প্রাপ্ত নম্বর হিসাব করে মোট ১০০ নম্বরের ভিত্তিতে মেধা তালিকা তৈরি করা হয়েছে।এছাড়া মিড টার্ম ও ক্লাস টেস্টেও শিক্ষকরা চাইলে এমসিকিউ প্রশ্ন রাখতে পারতেন, যা এখন আর করা যাবে না।
এ পদ্ধতিতে প্রতিটি প্রশ্নের জন্য প্রশ্নপত্রে চারটি বিকল্প উত্তর থাকে। তার মধ্যে সঠিক উত্তরটি বেছে নিয়ে দাগ দিতে হয় পরীক্ষার্থীকে।
কিন্তু পরীক্ষার অল্প সময় আগেও প্রশ্ন ফাঁস হলে সেখান থেকে সহজেই বহু নির্বাচনী প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার সুযোগ থাকে। তাছাড়া গত কয়েক বছরে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ভর্তি পরীক্ষায় বিশেষ ডিভাইসের মাধ্যমে পরীক্ষার হলের বাইরে যোগাযোগ করে এমসিকিউ উত্তর জেনে নেওয়ার বেশ কিছু ঘটনা ধরা পড়েছে।
বাংলাদেশে এসএসসিতে এমসিকিউ প্রশ্ন প্রবর্তন করা হয়েছিল ১৯৯২ সালে। তখন মোট ৫০টি বহু নির্বাচনী প্রশ্নের উত্তর দিতে হত; প্রতিটির জন্য বরাদ্দ ছিল ১ নম্বর করে।
দীর্ঘদিন ওই ব্যবস্থা চলার পর প্রশ্ন ফাঁস ঠেকাতে এখন এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় এমসিকিউ অংশ কমিয়ে আনছে সরকার। আর এবার থেকে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা হবে শতভাগ যোগ্যতাভিত্তিক বা সৃজনশীল প্রশ্নে।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মীজানুর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, এমসিকিউ ‘যেখানেই থাকে, সেখানেই জালিয়াতির সুযোগ’ থাকে, যেটা লিখিত পরীক্ষায় এড়ানো সম্ভব।
“তাছাড়া এমসিকিউয়ের মাধ্যমে মেধার যাচাই হয় না। আমরা চাই উচ্চ মাধ্যমিকের সিলেবাস থেকে কে কতটা শিখেছে, তার ভিত্তিতে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হবে।”
এমসিকিউ তুলে দেওয়া ছাড়াও ক্লাসে শিক্ষকদের নোট, গাইড বা লেকচার শিট দেওয়া নিষিদ্ধ করেছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, প্রতিটি কোর্সের জন্য ‘সুলভ মূল্যে বাজারে পাওয়া যায়’ এমন একটি ‘বিশ্বমানের টেক্সট বই’ নির্ধারণ করে দেবেন সংশ্লিষ্ট শিক্ষকরা।
প্রয়োজনে তারা একাধিক রেফারেন্স বই ব্যবহার করতে পারবেন। কিন্তু কোনো অবস্থাতেই শিক্ষকরা ক্লাসে নোট, গাইড বা লেকচার শিট দিতে পারবেন না।
সূত্রঃ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম