হাওর বাংলা ডেস্ক : নেপালের সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষে ব্যাপক জনবল ঘাটতি, বিশেষ করে প্রশিক্ষণ ও প্রশিক্ষণ সামগ্রীর ভয়াবহ সংকট রয়েছে। এ সঙ্কট না থাকলে প্রাণহানির পরিমাণ কমতে পারতো। দেশটির ইংরেজি দৈনিক দ্য হিমালয়ান টাইমস শনিবার এনিয়ে এক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এতে বলা হয়েছে, ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পাশে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের ‘বিমান বিধ্বস্তে অারো মানুষের জীবন বাঁচানো যেত?’ গত সোমবার নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পাশে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের বোম্বারডিয়ার ড্যাশ-৮ বিধ্বস্ত হয়। হিমালয়ান টাইমস বলছে, ‘উদ্ধার অভিযানে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের যথাযথ সুরক্ষা সামগ্রীর ব্যবস্থা থাকলে বিধ্বস্ত বিমানের জ্বলন্ত ধ্বংসস্তুপ থেকে আরো বেশি মানুষকে রক্ষা করা যেত।’ উদ্ধার অভিযানে অংশ নেয়া ফায়ার সার্ভিসের এক কর্মী হিমালয়ান টাইমসকে বলেন, ‘যথাযথ পোশাকের অভাবে তারা বিমানের চারপাশে জ্বলতে থাকা আগুনের আশ-পাশে পৌঁছাতে পারেননি। এ ধরনের বিপজ্জনক পরিস্থিতিতে যা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।’ ‘যদিও আন্তর্জাতিক সিভিল এভিয়েশন অর্গানাইজেশনের নিয়ম অনুযায়ী বিমান বিধ্বস্তের মাত্র তিন মিনিটের মধ্যে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় উদ্ধার ও ফায়ারসার্ভিসের কর্মীরা।’ তিনি বলেন, ‘অ্যালুমিনিয়ামের অগ্নি-নিরোধক পোশাকের অভাবে আমরা বিমানের ভেতরে পৌঁছানোর জন্য প্রায় অাধা-ঘণ্টা লড়াই করেছি।’ বিমানের যে অংশে আগুন লাগেনি সেদিক থেকেই ২২ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানান তিনি। বিমান বিধ্বস্তে নিহত যাত্রীদের ময়নাতদন্ত করেছেন ত্রিভুবন ইউভার্সিটি টিচিং হাসপাতালের চিকিৎসকরা। তারা বলেছেন, ‘নিহত ৪৯ জনের মধ্যে বেশির ভাগেরই প্রাণ গেছে বিষাক্ত ধোঁয়ায়। তবে যারা বেঁচে গেছে; তারা আগুনের তীব্র উত্তাপে অসুস্থ্য হয়ে পড়েছে। অপর এক উদ্ধারকারী বলেন, ‘যে যাত্রীরা ভাগ্যক্রমে আগুন থেকে রক্ষা পেয়েছিলেন, আমরা মূলত তাদের উদ্ধার করতে পেরেছি।’ নেপালের সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তারা নিশ্চিত করে বলছেন, ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে (টিআইএ) অগ্নিনির্বাপন কর্মীদের জন্য যে পোশাক ছিল; সেই পোশাকে সক্রিয় আগুনে প্রবেশ করা সম্ভব নয়। অগ্নিনিরোধক পোশাক থাকলে তারা আরো অনেক বেশি মানুষকে জীবিত উদ্ধার করতে পারতেন। টিআইএ বলছে, সোমবার দুপুর ২ টা ১৮ মিনিটে ইউএস-বাংলার বিমানটি বিধ্বস্তের পরপরই আগুনে ঢেকে যায়। এক বিবৃতিতে টিআইএ বলছে, ‘বিকেল তিনটায় আগুন পুরো নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। পৌনে ৬টার মধ্যে বিমানের ভেতর থেকে সব মরদেহ বের করা হয়।’ বিমান বিধ্বস্তে বেঁচে গেছেন বাংলাদেশি শাহরিন আহমেদ (২৯)। তিনি বলেন, তিনি অন্য যাত্রীদের পুড়তে, চিৎকার করতে, লুটিয়ে পড়তে দেখেছেন।