হাওর বাংলা ডেস্ক : আওয়ামী লীগ রাজনৈতিকভাবে ‘দেউলিয়া’ হয়ে মামলার আশ্রয় নিচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বিএনপি রাজনৈতিকভাবে দেউলিয়া হয়ে পড়েছে বলে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যের পাল্টায় বৃহস্পতিবার(১৫ মার্চ ) চট্টগ্রামে সমাবেশে এই মন্তব্য করেন তিনি। খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবিতে চট্টগ্রাম নগরীর নাসিমন ভবনে দলীয় কার্যালয়ে মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা বিএনপির উদ্যোগে এই সমাবেশ হয় । ফখরুল বলেন, “কালকে উনি (ওবায়দুল কাদের) বলেছেন বিএনপি না কি রাজনৈতিকভাবে দেউলিয়া হয়ে গেছে। বিএনপি যদি রাজনৈতিকভাবে দেউলিয়া হয়ে যায়, তাহলে নির্বাচন দিতে ভয় কোথায়? নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দেন। তখন দেখেন কে দেউলিয়া হয়েছে। “আপনারা রাজনৈতিকভাবে দেউলিয়া হয়েছেন বলেই আজকে মামলা-মোকদ্দমার আশ্রয় নিচ্ছেন। একটা কিছু হলেই মামলা… যেন একটা ফরম ঠিক করা আছে সব আসামি করে দেন। তারপর যাকে খুশি তাকে ধরে নিয়ে আসেন।” দলীয় চেয়ারপারসনের মুক্তি দাবিতে ঢাকাসহ সারাদেশে সমাবেশের কর্মসূচি দিয়ে ছিল বিএনপি। ঢাকায় পুলিশের অনুমতি না পাওয়ার পর চট্টগ্রামেও কাঙ্ক্ষিত স্থান লালদীঘির ময়দান সমাবেশের জন্য পায়নি তারা। ফখরুল বলেন, বিএনপিকে সারাদেশে কোথাও সভা করতে দেওয়া হচ্ছে না। “এখানে আপনারা জনসভা করার অনুমতি পেয়েছেন গত রাতে। এক ঘণ্টা আগে খুলনায় জনসভার অনুমতি পেয়েছিলাম। ঢাকায় এখনও জনসভার অনুমতি দেওয়া হয়নি।” বিএনপিকে অনুমতি না দেওয়ার বিপরীতে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিভিন্ন জেলায় জনসভা করে ভোট চওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করেন ফখরুল। ভোটে হারের শঙ্কা থেকে আওয়ামী লীগ নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে চাচ্ছে না বলে দাবি করেন বিএনপি মহাসচিব। সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, “আসুন কথা বলি; আলোচনার মধ্য দিয়ে সমস্যার সমাধান করি। “তারা আলোচনা করতে চায় না। তারা আইন শৃঙ্খলা বাহনীর লোকদের দিয়ে নিপীড়ন-জুলুমের মাধ্যমে দেশের মানুষকে দমিয়ে রাখতে চায়।” ঢাকায় পুলিশ হেফাজতে ছাত্রদল নেতা মিলনের মৃত্যুর জন্য নির্যাতনকেই দায়ী করেন ফখরুল। তিনি বলেন, বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ৭৮ হাজার মামলা হয়েছে। যেগুলোতে ১১ লাখ নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে। “খালেদা জিয়া রাজনীতিতে আসার পর থেকে ৩৫ বছর ধরে গণতন্ত্র ও দেশের জন্য সংগ্রাম করে যাচ্ছেন। মিথ্যা সাজানো মামলা দিয়ে তাকে কারাগারে আটক করে রাখা হয়েছে।” চট্টগ্রাম নগর বিএনপির সভাপতি সদ্য কারামুক্ত শাহাদাত হোসেনের সভাপতিত্বে এ সমাবেশে দলের ডজন খানেক কেন্দ্রীয় নেতা বক্তব্য রাখেন। স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ বলেন, “আমাদের সামনে তিনটি চ্যালেঞ্জ। খালেদা জিয়াকে মুক্ত করার চ্যালেঞ্জের পাশাপাশি নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে। নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন করে খালেদা জিয়াকে জয়ী করতে হবে। নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত না হলে আন্দোলন করতে হবে।” সরকারের পররাষ্ট্র নীতির সমালোচনা করে সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, বর্তমানে ১০ লাখ রোহিঙ্গা এ দেশে বসবাস করছে। বিপদে আশ্রয় দিলেও তাদের দেশে ফিরিয়ে নিতে জাতিসংঘের মাধ্যমে মিয়ানমারের উপর চাপ সৃষ্টি করতে হবে। “মানবিক সাহায্য আরও কূটনৈতিক সাহায্য এক নয়। সরকারের ব্যর্থ পররাষ্ট্র নীতির কারণে ভারত, চীন আমাদের সাহায্য করতে রাজি নয়।” নগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্করের পরিচালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশারফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, আবদুল মঈন খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস প্রেসিডেন্ট বরকতউল্লাহ বুলু, মো. শাহজাহান, মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন, গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী, উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক, গোলাম আকবর খন্দকার, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান শামীম, সাবেক মন্ত্রী জাফরুল ইসলাম, সাবেক সাংসদ রোজি কবির, এসএম ফজলুল হক, নগর বিএনপির সহ-সভাপতি আবু সুফিয়ান।