সর্বশেষ
প্রচ্ছদ / হাওরাঞ্চল / কিশোরগঞ্জ / পকেটে আছে রশিদে নেই

পকেটে আছে রশিদে নেই

নিজস্ব সংবাদদাতা : কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম উপজেলার আদমপুর ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা আনিসুজ্জামানের বিরুদ্ধে বেশি টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ১০ কৃষক গত ২৫ জানুয়ারি উপজেলা সহকারী কমিশনারের (ভূমি) কাছে অভিযোগ করেছেন।

অভিযোগে উল্লেখ করেন, রশিদে কম টাকা উল্লেখ থাকলেও অভিযুক্ত ভূমি কর্মকর্তা অনেক বেশি টাকা নিয়েছেন। তাদের কাছ থেকে তিনি লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন।

অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, কৈরাল গ্রামের কৃষক আ. জলিলের কাছ থেকে আট হাজার টাকা নিয়ে ৯২৮, আদমপুর গ্রামের বাচ্চু মিয়ার কাছ থেকে পাঁচ হাজার টাকা নিয়ে ১১৮, চৌদন্ত গ্রামের সুকুমার দাসের কাছ থেকে ৬০ হাজার টাকা নিয়ে ১২ হাজার ৬৪০, একই গ্রামের মনমোহন দাসের কাছ থেকে ৩২ হাজার টাকা নিয়ে দুই হাজার ২৯ টাকার রসিদ দেন ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা মো. আনিসুজ্জামান।

এছাড়া ইছাপুর গ্রামের রাখেশ দাসের কাছ থেকে ১৫০০ টাকা নিয়ে ৭৯৫, লাউড়া গ্রামের জলেখা খাতুনের কাছ থেকে ১৫ হাজার টাকা নিয়ে ২০, একই গ্রামের ছিদ্দিক মিয়ার কাছ থেকে ছয় হাজার টাকা নিয়ে ১৯৩, মাটিয়াখোলা গ্রামের নুরুল ইসলামের কাছ থেকে সাড়ে তিন হাজার টাকা নিয়ে ৪৭২ এবং লাউড়া গ্রামের পলাশ মিয়ার কাছ থেকে সাড়ে তিন হাজার টাকা নিয়ে তাকে মাত্র ২০ টাকার রশিদ দেন এই ভূমি কর্মকর্তা।

আদমপুর ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগের সভাপতি আ. জলিল জানান, তিনি দুই একর জমির কর দিতে গেলে ভূমি কর্মকর্তা ১৫ হাজার টাকা দাবি করেন। পরে আট হাজার টাকা দেওয়া হলে মাত্র ৯২৮ টাকার রশিদ দেওয়া হয়। কম টাকার রশিদের ব্যাপারে প্রশ্ন করলে ভূমি কর্মকর্তা তাকে বলেন, ‘তাহলে ১৫ হাজার টাকাই দিতে হবে।’

কৃষক সুকুমার দাস জানান, তার কাছ থেকে ৬০ হাজার টাকা নিয়ে তাকে মাত্র ১২ হাজার ৬৪০ টাকার রশিদ দেওয়া হয়েছে। কম টাকার রশিদের বিষয়ে তাকে জিজ্ঞেস করলে জানায়, ‘সবাইকে এভাবেই রশিদ দেওয়া হয়।’

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, অভিযুক্ত ভূমি কর্মকর্তা তিন বছর আগে আদমপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিসে যোগ দেন। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে অভিযোগ দিলেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।

গত বছরের ৯ জুন ওই ভূমি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসকের কাছে অভিযোগ দিয়েছিলেন আদমপুর ইউনিয়নের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান আব্দুল মন্নাফ। তিনি বলেন, এর আগে একজন মুক্তিযোদ্ধাও এ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছিলেন। রহস্যজনক কারণে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
গত ২৩ জানুয়ারি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আদমপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিসে গেলে শতাধিক কৃষক ওই ভূমি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেন।
এ ব্যাপারে আদমপুর ইউনিয়ন ভূূমি কর্মকর্তা মো. আনিসুজ্জামানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি দাবি করেন, এসব তার বিরুদ্ধে সাজানো নাটক।

অষ্টগ্রামের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মো. মাইদুল ইসলাম জানান, আদমপুর ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগের তদন্ত হচ্ছে। তদন্ত শেষ না হলে কিছু বলা যাবে না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *