সর্বশেষ
প্রচ্ছদ / হাওরাঞ্চল / হবিগঞ্জ / মনোমুগ্ধকর বিথঙ্গল আখড়া

মনোমুগ্ধকর বিথঙ্গল আখড়া

টিটু দাস : দিনটা ছিল মঙ্গলবার। প্রখর রোদে পানিপথে ছুটে চলা গন্তব্য হবিগঞ্জ জেলার বানিয়াচং উপজেলার বিথঙ্গল আখড়া। আমরা যখন আখড়ায় পৌঁছি তখন দুপুর সোয়া ১২ টা। আখড়ায় প্রবেশ করতে হলে স্যান্ডেল খুলে ভেতরে প্রবেশ করতে হয়। প্রখর রোদে আখড়ায় প্রবেশ করতেই চোখে পড়ে ছোট ছোট ১২০ টি কক্ষ। এক সময় ১২০ টি কক্ষে ১২০ জন বৈষ্ণব থাকতেন।

তবে বর্তমানে একজন বৈষ্ণব আছেন। আখড়ার ভেতরে প্রবেশ করতেই বুঝা যায় পুরো আখড়ায় পরিচর্যার ছোঁয়া। আখড়ার ভেতরে অনেক মানুষের জটলা দেখে সামনে যেতেই বুঝা গেল আখড়ার মহন্তের কাছ থেকে অনেকেই আবার নানান রোগের সেবা নিচ্ছেন। তখন ছোট একটি ফটক দিয়ে সামনে এগোতেই দেখা গেল বিশাল এক দীঘি। শান বাঁধানো ঘাট। দীঘির চারপাশে বিভিন্ন প্রজাতির গাছ। এক মনোমুগ্ধকর পরিবেশ। বর্ষার প্রতিটা দিন বিথঙ্গল আখড়ায় হাজারো পর্যটকের সমাগম ঘটে।

জানা যায়, উপমহাদেশের বিভিন্ন তীর্থ ঘোরার পর ষোলো শতকে এখানে ঘাঁটি গাড়েন রামকৃষ্ণ গোস্বামী। তার শিষ্যত্ব গ্রহণ করে ত্রিপুরার রাজা উচ্চবানন্দ মাণিক্য বাহাদুর প্রাচীন নির্মাণ কৌশল সমৃদ্ধ দু’টি ভবন নির্মাণ করে দেন। এ আখড়ায় সস্ত্রীক এসে প্রায়ই অবস্থান করতেন তিনি। পরে রামকৃষ্ণ গোম্বামীর সমাধিস্থলে আধুনিক নির্মাণ কৌশল সমৃদ্ধ ভবন তৈরি করা হয়। চালা আকৃতির ছাদের সেই ভবনের একপাশে রাখা শ্বেত পাথরের চৌকিটির ওজন ২৫ মণ। আরো আছে পিতলের সিংহাসন, নকশাখচিত প্রাচীন রথ এবং রুপার পাখি ও সোনার মুকুট। আখড়ার নিজস্ব ৪০ একর জমির উত্পাদিত ফসল ও ভক্তদের দানে যাবতীয় ব্যয় নির্বাহ হয়।

যেভাবে যাবেন : ভরা বর্ষায় কিশোরগঞ্জের বালিখলা ঘাট থেকে পানিপথে ইঞ্জিন চালিত ট্রলারে ৩-৪ ঘন্টা সময় লাগবে। এছাড়া স্পীড বোটে সোয়া ১ ঘন্টায় বিথঙ্গল আখড়ায় যাওয়া যায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *