সর্বশেষ
প্রচ্ছদ / হাওরাঞ্চল / কিশোরগঞ্জ / বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়তে হলে সোনার মানুষ চাই : রাষ্ট্রপতি

বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়তে হলে সোনার মানুষ চাই : রাষ্ট্রপতি

টিটু দাস : রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ বলেছেন, বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়তে হলে সোনার মানুষ হতে হবে। ভালো মানুষ হতে হবে। আর নি¤œ মধ্যম আয়ের দেশ থেকে আগামী ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নতশীল রাষ্ট্রে পরিণত করতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।

বৃহস্পতিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) বিকেল সাড়ে ৫টায় নিজ জন্মভূমি মিঠামইনে তাঁর বাবার নামে প্রতিষ্ঠিত হাজী তায়েব উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের সুবর্ণ জয়ন্তী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।

শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে রাষ্ট্রপতি বলেন, উন্নয়নশীল দেশ গড়তে তোমাদের সৎ থাকতে হবে। সৎ হয়ে কাজ করতে হবে।

রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ অনুষ্ঠানস্থলের বিদ্যাপীঠ প্রতিষ্ঠাকালের ইতিহাস তুলে ধরে বলেন, ছাত্র রাজনীতি থেকে দেখে এসেছি হাওড়ে পড়াশুনার জন্য তেমন বিদ্যাপীট ছিল না। এক পর্যায়ে এলাকার গণ্যমান্যদের সাথে পরামর্শ করে মিঠামইনে স্কুল প্রতিষ্ঠার জন্য উদ্যোগ নিই। পরে হাজী তায়েব উদ্দিন স্কুল প্রতিষ্ঠার পর জেলার নিকলীর একজন প্রধান শিক্ষককে খুঁজে বের করে তাঁকে এখানে যোগদানের অনুরোধ জানাই। তিনি এখানে আসায় স্কুলের শিক্ষার্থীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে থাকে। এ সময় রাষ্ট্রপতি স্কুল প্রতিষ্ঠাকালে যারা সহযোগিতা করেছেন তাঁদের স্মৃতিচারণ করেন।

মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হক ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ আবদুল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন কিশোরগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য রাষ্ট্রপতির বড় ছেলে রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিক, হাইকোর্টের বিচারপতি আমির হোসেন, রাষ্ট্রপতি কার্যালয়ের সচিব সম্পদ বড়–য়া, রাষ্ট্রপতির সামরিক সচিব মোঃ সরোয়ার হোসেন, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ জিল্লুর রহমান, মিঠামইন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুস শাহিদ ভূঁইয়া, সদর ইউপি চেয়ারম্যান শরীফ কামাল প্রমুখ। এ সময় রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব মোঃ জয়নাল আবেদীন, জেলা প্রশাসক মোঃ সারওয়ার মুর্শেদ চৌধুরী, পুলিশ সুপার মোঃ মাশরুকুর রহমান খালেদ বিপিএম, ইউএনও তাসলিমা আহমেদ পলিসহ বিভিন্ন সামরিক, বেসামরিক কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।

শৈশবের কথা খুব বেশি মনে পড়ছে মন্তব্য করে রাষ্ট্রপতি আরও বলেন, আমি বর্ষাকালে সাঁতরিয়ে মিঠামইন বাজার থেকে বাড়িতে গিয়েছি। ছাত্রজীবন থেকেই রাজনীতি শুরু করেছি। ওই সময় প্রশাসনের বিভিন্ন কর্মকর্তাগণ আমাকে নানাভাবে হয়রানি করতো। আমি ছাত্রজীবনে জেলও খেটেছি। এ সময় রাষ্ট্রপতি ছাত্র জীবনসহ যে কোনো নির্বাচনে নিজের প্রতিদ্বন্দ্বীতা করার সময় বাবা জীবিত থাকা অবস্থায় খুব কাছ থেকে টাকা খরচসহ তাঁকে সার্বিক সহযোগিতা করে গেেেছন বলে স্মৃতিচারণ করেন।

এর আগে রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ মিঠামইন উপজেলার বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ দেখতে বের হন।। এ সময় তিনি রিকশায় ও পায়ে হেঁটে মিঠামইন উপজেলা হাসপাতাল, তমিজা খাতুন সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, ইসলামপুর, শান্তিপুর, কাচারি লাইব্রেরী, মুক্তিযোদ্ধা কার্যালয় ও ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয় পরিদর্শন করেন। রাষ্ট্রপতি এ সময় স্থানীয় গণ্যমান্যদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত করেন। পরে তিনি মিঠামইন ডাকাবাংলোয় অবস্থান করে বিশ্রাম নেন। বিকেলে রাষ্ট্রপতি হাজী তায়েব উদ্দিন স্কুলের সুবর্ণ জয়ন্তী অনুষ্ঠানে যোগদান করেন।
রাষ্ট্রপতি সন্ধ্যায় পৌনে ৭টা পর্যন্ত তাঁর বক্তব্যে স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে মিঠামইনে তাঁর শৈশব-কৈশোর কেটেছে, তিনি এসবের স্মৃতিচারণ করেন। এ সময় শিক্ষাজীবন ও রাজনীতিসহ নানা বিষয়ের স্মৃতি তুলে ধরেন। পরে ওইদিন রাতে রাষ্ট্রপতি উপজেলাস্থ কামালপুর গ্রামে নিজবাড়িতে রাত্রিযাপন করেন।
আজ শুক্রবার (২৮ সেপ্টেম্বর) বাড়ির মসজিদে বাদ জুম্মার নামাজ আদায় করে রাষ্ট্রপতি বাবা হাজী মোঃ তায়েব উদ্দিন এবং মা তমিজা খাতুনের কবর জিয়ারত করবেন। পরে বিকেল পৌনে ৪টায় হেলিকপ্টারযোগে বঙ্গভবনের উদ্দেশ্যে রাষ্ট্রপতি মিঠামইন ত্যাগ করবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *