সর্বশেষ
প্রচ্ছদ / খেলাধুলা / কাঁদলেন, কাঁদালেন সৌম্য

কাঁদলেন, কাঁদালেন সৌম্য

হাওর বাংলা ডেস্ক : ১৯তম ওভারে যখন রুবেল ২২ রান দিলেন তখনও ভারতের প্রয়োজন ছিল ১২ রান। ২০তম ওভারে বোলিং করতে আসলেন সৌম্য সরকার। সৌমের প্রথম বলটা ওয়াইড। ৬ বলে ১১ রান। ডট, ১। ৪ বলে ১০ রান! আবারও ১, ৩ বলে ৯ রান। চতুর্থ বলে দুর্ভাগ্যক্রমে ৪, ২ বলে ৫ রান। পরের বল, উড়িয়ে মারলেন শংকর। দুই ফিল্ডার ধাক্কা খেলেন, তবে বল হাতছাড়া হলো না। আউট! ১ বলে ৫ রান দরকার ভারতের। সৌম্য আশা জাগালেও স্বপ্ন পূরণ হয়নি বাংলাদেশের। শেষ বলে ৬ মেরে অবিস্মরণীয় এক জয় বাংলাদেশের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেন দীনেশ কার্তিক। আর তাতে পিচে মুখ লুকিয়ে কাঁদলেন সৌম্য, কাঁদালেন গোটা দেশকে। সাকিবের চোখেও তখন জল, কিন্তু নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করে সৌম্যকে মাটি থেকে তুলে আনলেন। মুশফিক টেনে বুকে জড়ালেন তাকে। আরও একবার শোকে স্তব্ধ হয়ে বাংলাদেশকে শিরোপা বঞ্চিত হতে হলো। শেষ বলে দিনেশ কার্তিকের ছয় হাঁকানোর পর শুধু যে খেলোয়াড়রা কেঁদেছেন তা কিন্তু নই লাখো কোটি দর্শক কেঁদেছেন। বাংলাদেশের এমন পরাজয় কিছুতেই মানতে পারছে না ক্রিকেটপ্রেমীরা। এর আগে ২০০৯ সালের ত্রিদেশীয় ট্রফির ফাইনালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে শেষ মুহূর্তে এসে হারতে হয়েছিল বাংলাদেশকে। নিশ্চিত জয়ের ম্যাচ ছিল সেটি। ১৫২ রানের মামুলি পুঁজি নিয়েও সেদিন প্রাণপণ লড়াই চালিয়েছিল টাইগাররা। বাংলাদেশের বোলিং তোপের মুখে শুরুতে ৬ রানেই ৫ উইকেট হারিয়ে বসে লঙ্কানরা। প্রথম ছয় স্বীকৃত ব্যাটসম্যানের মধ্যে একমাত্র কুমারা সাঙ্গাকারা (১৩৩ বলে ছয় বাউন্ডারিতে ৫৯) মাথা তুলে দাঁড়িয়েছিলেন। এরপর লোয়ার অর্ডারের জিহান মোবারক ১৬ আর দুই বোলার পারভেজ মাহারুফ (৭৬ বলে ৩৮*) ও বিশ্ব সেরা অফস্পিনার মুত্তিয়া মুরালিধরনই (১৬ বলে চার বাউন্ডারি আর দুই ছক্কায় ৩৩) বদলে দেন খেলার চিত্র। হেরে যায় বাংলাদেশ। ২০১২ সালের ২২ মার্চ ফাইনালে পাকিস্তানিদের ২৩৬ রানে বেঁধে ট্রফি জয়ের সম্ভাবনা জাগিয়েছিল মুশফিক বাহিনী; কিন্তু শেষ ওভারে গিয়ে হতাশায় ডুবতে হয় আবারও। ৩ উইকেট হাতে রেখে ৬ বলে ৯ রান করতে না পেরে হেরে যায় মুশফিকের দল। ২০১৬ সালের ৬ মার্চ শেরে বাংলায় আবার ফাইনালে স্বপ্ন ভঙ্গের ম্যাচ হয়ে থাকলো। টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটের এশিয়া কাপের ফাইনাল ম্যাচটি প্রবল ঝড়ো বাতাস ও ভারি বর্ষণে ২০ ওভার থেকে কমে ১৫ ওভারে গড়ায়। তাতে ১২০ রানের মামুলি স্কোর নিয়ে ৮ উইকেটে হার মানে মাশরাফির দল। সর্বশেষ মাত্র ৫১ দিন আগে (২৭ জানুয়ারি) আবারও ফাইনালে বিপর্যয়। দেশের মাটিতে ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৭৯ রানে হেরে যাওয়া। সারা বছর যে মাঠে অনুশীলনে কাটে ঘণ্টার পর ঘণ্টা, যেখানে ক্লাব ক্রিকেট, জাতীয় লিগ, বিসিএল আর বিপিএল খেলে খেলে এতদুর এসেছেন সবাই, সেই শেরে বাংলায় লঙ্কানদের ২২১ রানে বেঁধে ফেলেও শেষ পর্যন্ত জিততে পারেনি মাশরাফি বাহিনী। মাত্র ১৪২ রানে অলআউট হয়ে যায় তারা। এবার নিদাহাস ট্রফির ফাইনালে এসে একেবারে শেষ বলে ছক্কা খেয়ে হেরে যায় বাংলাদেশ। আবারও থাকলো ট্রফি অধরা। বাংলাদেশ এখনও কোনো টুর্নামেন্টের ট্রফি জয়েরই স্বাদ পেলো না। একইসঙ্গে বার বার ভারতের বিপক্ষেই এসে নকআউটে হেরে বসার রেকর্ড অক্ষুণ্ন রেখেছে বাংলাদেশ। ২০১৫ বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনাল, ২০১৬ এশিয়া কাপ টি-টোয়েন্টির ফাইনাল, ২০১৭ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সেমিফাইনাল এবং ২০১৮ নিদাহাস ট্রফির ফাইনালে এসে হারলো বাংলাদেশ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *